নাগরিকত্ব সংশোধন বিল প্রত্যাহার দাবি দুই মুখ্যমন্ত্রীর

নাগরিকত্ব সংশোধন বিল অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানালেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা ও মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী ওদুই জোরামথাঙ্গা। শুক্রবার বিকেলে দুই মুখ্যমন্ত্রী অন্য মন্ত্রীদের নিয়ে দেখা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে। তাঁকে তাঁরা বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। দেশের স্বার্থে এই বিল অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হোক।

রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর নর্থ ব্লকের বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের কনরাড সাংমা বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তাঁরা বলেছেন, শুধু মেঘালয়ই নয়, এই বিল পুরো উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সামাজিক মেলবন্ধন নষ্ট করে দেবে। সৃষ্টি করবে আইনশৃঙ্খলার তীব্র সমস্যা। এই বিল দেশকে দুর্বল করে তুলবে।

মুখ্যমন্ত্রী সাংমার সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী প্রেস্টন টাইনসং ও পর্যটনমন্ত্রী মেটবা লিংদো। রাজনাথকে তাঁরা বলেন, এই বিল রাজ্যের আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের মানসিকতায় তীব্রভাবে আহত করেছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সাংমা বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে তিনি শিগগির এই বিল নিয়ে আলোচনায় বসার আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাঁর আশা, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পরিস্থিতি বিবেচনা করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। বিলটি পাস করাতে সচেষ্ট হবে না।

নাগরিকত্ব বিলকে কেন্দ্র করে আসামসহ গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চল অগ্নিগর্ভ। রাজনীতির দিক দিয়ে যেসব আঞ্চলিক দল বিজেপির কাছাকাছি এসেছিল, এই বিলকে কেন্দ্র করে তারা ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে। মণিপুরে অশান্তি চলছে। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং চিঠি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, বিলের আওতা থেকে মণিপুরকে বাইরে রাখতে। অরুণাচল প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী গেগং আপাং বিজেপি ছেড়ে দিয়েছেন। নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেফু রিও বিলটি পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছেন। বিরোধিতা করছে ত্রিপুরার শাসক বিজেপির শরিক আইপিএফটি। শুক্রবার আসামে বিজেপির এমপি প্রদন বরুয়াকে কংগ্রেস কালো পতাকা দেখায়। দলের পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগও দাখিল করা হয়েছে। 

এ অবস্থায় বিজেপি কী করবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। দলের একটি অংশের ধারণা, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, এই বিল নিয়ে ধীরে না চললে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আসামে অসম গণপরিষদে (অগপ) মন্ত্রীরা ইস্তফা দিয়েছেন, যদিও তা এখনো গৃহীত হয়নি। বিজেপির নেতা রাম মাধব জোটসঙ্গীদের ফিরে আসার আহ্বান জানালেও সেই ডাকে অগপ এখনো সাড়া দেয়নি। বিজেপি চাইছে রাজ্যের ভূমিপুত্রদের স্বার্থরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করে বিলটি আইনে রূপান্তর করতে। কিন্তু তাতে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে কি না, সন্দেহ।