মমতার ব্রিগেডে লোকসমাগম নিয়ে বিতর্ক

ব্রিগেড সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন কলকাতার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
ব্রিগেড সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন কলকাতার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

কলকাতার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গত বছরে ঘোষিত মহাসমাবেশ সফল হয়েছে। মমতার ডাকে সাড়া দিয়ে গত শনিবার ভারতের ২৩ দলের প্রতিনিধিরা সমাবেশে যোগ দেন। তাঁরা ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে ধর্মান্ধ দলের শাসনের প্রতিবাদ জানান।

সমাবেশ শেষে তৃণমূলের নেতারা দাবি করে, ৪০ লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে। তবে এই লোকসংখ্যা নিয়ে তৃণমূল বিরোধীদের মধ্যে প্রথম বিতর্ক শুরু হয়। কিন্তু সমাবেশ শেষে পুলিশ জানিয়ে দেয় ১০ লাখেরও কম মানুষ জড়ো হয়েছিল।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষতো বলেছেন, সিপিএমের শেষ দিনের চেয়েও এখন তৃণমূলে দুর্দিন চলছে। তাঁর দাবি, ব্রিগেডে সাড়ে ৩ লাখ মানুষের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, কীভাবে সেখানে ৪০ লাখ মানুষের সমাগম হয়? তিনি আরও মন্তব্য করেন, ব্রিগেডতো পুরো ভরেনি। ফাঁকা ছিল।

দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, বিকেলে মমতার ভাষণ শুরুর আগেই মানুষ মাঠ ছেড়ে বাড়ির দিকে পা বাড়ায়। যদিও মমতা বারবার মঞ্চে বলেছেন, আমি সবার শেষে ভাষণ দেব। আগে আমাদের অতিথিদের ভাষণ দেওয়ার সুযোগ দিন। অতিথিদের দেখিয়ে দিন এই রাজ্যের মানুষ কত শৃঙ্খলাবদ্ধ। মানুষ তা শোনেননি। মমতার ভাষণের আগেই বহু মানুষ মাঠ ছেড়ে চলে যায়।

কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতা ও লোকসভায় বিরোধী দলীয় নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে কলকাতার প্রদেশ কংগ্রেস অফিসে সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিয়ে বলেছেন, প্রদেশ কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত ছাড়া কংগ্রেস কখনো তৃণমূলের সঙ্গে জোটে যাবে না।

যদিও মমতা ব্রিগেডে শুনিয়ে দেন, নির্বাচনের পরেই মহাজোটের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা ঠিক হবে।

এখন পশ্চিমবঙ্গের লোকসভার ৪২টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের ৩৪, কংগ্রেসের ৪, সিপিএমের ২ এবং বিজেপির ২টি আসন রয়েছে।

এককালের তৃণমূলের সেকেন্ড ইনকমান্ড ও বর্তমানে বিজেপি নেতা মুকুল রায় গতকাল কলকাতায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তৃণমূল বলেছে, ২৩ দল যোগ দিয়েছে। আসলে যোগ দিয়েছে ১৩টি দল। লোকসমাগমের প্রশ্নে বলেছেন, এই সমাবেশে ৩ লাখ মানুষ যোগ দিয়েছিল। মুকুল রায় কটাক্ষ করে আরও বলেছেন, তৃণমূল গণতন্ত্র বাঁচাতে এই সমাবেশের ডাক দিয়েছে। অথচ এই পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত ভোটে ভোট দিতে দেয়নি মানুষকে। ভোট ডাকাতি করে জয়ী হয়েছে। তাই তাঁদের মুখে গণতন্ত্র রক্ষা করার দাবি মানায় না।

রাজ্য পুলিশ বলছে, ব্রিগেডে ১০ লাখের কম মানুষ যোগ দিয়েছে। এবার সবাই আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি বাম দলের ব্রিগেড ও ৮ ফেব্রুয়ারি বিজেপির ব্রিগেড সমাবেশের দিকে তাকিয়ে আছে। তাঁরা তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশকে টপকাতে পারবেন কি না তা নিয়েই চিন্তা।