থাই রাজকুমারীর প্রার্থিতা বাতিল

থাইল্যান্ডের রাজকুমারী উবলরাতানা মাহিদল। ছবি: রয়টার্স
থাইল্যান্ডের রাজকুমারী উবলরাতানা মাহিদল। ছবি: রয়টার্স

থাইল্যান্ডের রাজকুমারী উবলরাতানা মাহিদলকে (৬৭) নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। এর ফলে তিনি আগামী ২৪ মার্চ অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে আর প্রার্থী হতে পারছেন না। আজ সোমবার থাইল্যান্ডের নির্বাচন কমিশন এ ঘোষণা দেয়।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, গত শুক্রবার সকালে থাই রাকসা চার্ট পার্টি আগামী সাধারণ নির্বাচনে তাদের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী পদে রাজকুমারী উবলরাতানা মাহিদলের নাম ঘোষণা করে। রাজকুমারীও ওই মনোনয়ন মেনে নেন। তবে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ওই দিনই তাঁর বড় বোনের মনোনয়নের সমালোচনা করে একটি বিবৃতি দেন। তিনি বলেন, রাজপরিবারের কোনো সদস্যকে রাজনীতিতে আনা ঐতিহ্য ও জাতীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী সিদ্ধান্ত। এটি ‘ভীষণ অনুচিত’ হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। রাজপরিবারকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখতে হবে, তিনি স্মরণ করিয়ে দেন। এরপরই থাই রাকসা চার্ট পার্টি দ্রুত বিবৃতি দিয়ে জানায়, রাজার আদেশ শিরোধার্য। এরই ধারাবাহিকতায় দেশটির নির্বাচন কমিশন ২৪ মার্চ অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় উবলরাতানার নাম নেই। এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর প্রার্থিতা বাতিল হলো। নির্বাচন কমিশন এক বৈঠকের পর বিবৃতিতে জানায়, ‘রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষতা ধারণ করার নিয়ম রাজপরিবারের প্রতিটি সদস্যের জন্য প্রযোজ্য। ’

থাইল্যান্ডের রাজকুমারী উবলরাতানা মাহিদলকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। ছবি: রয়টার্স
থাইল্যান্ডের রাজকুমারী উবলরাতানা মাহিদলকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। ছবি: রয়টার্স

গত শুক্রবার ইনস্টাগ্রামের এক পোস্টে উবলরাতানা জানান, তিনি তাঁর রাজকীয় সব উপাধি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। এখন থেকে তিনি একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে জীবন যাপন করবেন। প্রধানমন্ত্রী পদে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করে উবলরাতানা বলেছিলেন, তিনি চেয়েছিলেন একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে তাঁর অধিকার চর্চা করতে। সব থাই নাগরিকের সমৃদ্ধির জন্য তিনি আন্তরিকতা ও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন।

রাজকুমারী উবলরাতানা মাহিদল ১৯৫১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৬ সালে প্রয়াত রাজা ভুমিবলের বড় সন্তান উবলরাতানা।

২০১৪ সালে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এটাই প্রথম সাধারণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। সেনাবাহিনীর প্রধান প্রাউত চান-ওচা ওই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন এবং বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। উবলরাতানার মতো জনপ্রিয় কেউ মাঠে না থাকায় জান্তা প্রধানের জয়ী হওয়ার পথ মসৃণ হলো। ১৯৩২ সালের পর এ পর্যন্ত ১২ বার ক্ষমতা দখল করেছে সেনাবাহিনী।