সময়ক্ষেপণের কৌশল নিয়েছেন মে?

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় ব্রেক্সিট চুক্তির পরিবর্তন বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সাড়া পাননি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। চুক্তির পরিবর্তনে তিনি এমপিদের কাছে আরও সময় চাইবেন বলে খবর বেরিয়েছে। এ ছাড়া বিরোধী দলীয় নেতা জেরেমি করবিনের সঙ্গে আবারও আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন মে।

প্রধানমন্ত্রীর এমন নমনীয় মনোভাবকে সময়ক্ষেপণের কৌশল হিসেবে দেখছে বিরোধী দল লেবার পার্টি। লেবার দলের ব্রেক্সিট বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলছেন, পার্লামেন্টকে আগাম সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ না দিয়ে বিষয়টিকে একদম শেষ সময়ের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। শেষ মুহূর্তে গিয়ে সম্পাদিত চুক্তি অথবা চুক্তি ছাড়াই বিচ্ছেদ-এই দুয়ের মধ্যে বেছে নেওয়ার কথা বলা হবে বলে আশঙ্কা তাদের। তিনি দ্রুত ব্রেক্সিট চুক্তির ওপর পুনরায় ভোটাভুটির আহ্বান জানান।

বিচ্ছেদ পরবর্তী সময়ে আয়ারল্যান্ড সীমান্ত উন্মুক্ত রাখার নিশ্চয়তা ‘বেকস্টপ ব্যবস্থা’র গ্রহণযোগ্য পরিবর্তন করার পক্ষে মত দিয়েছে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট। চুক্তিতে উল্লেখিত বেকস্টপ ব্যবস্থার কারণে যুক্তরাজ্য অনির্দিষ্টকালের জন্য ইইউ’র অনুগত হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা।

প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে এই ‘বেকস্টপ’ ধারার পরিবর্তনের দাবি নিয়ে গত কয়েক দিনে ইইউ নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন। কিন্তু ইইউ নেতারা বলেছেন, সম্পাদিত চুক্তি পরিবর্তনের সুযোগ নেই। আয়ারল্যান্ড সীমান্ত উন্মুক্ত রাখতে বেকস্টপ-এর চাইতে উত্তম কোনো বিকল্প নেই বলে তাদের মত। তবে আলোচনার ফল নিয়ে চূড়ান্ত কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি কোনো পক্ষ।

প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে আগামী বুধবার পার্লামেন্টে আলোচনার ফলাফল তুলে ধরবেন। এদিন তিনি চুক্তির পরিবর্তনে আরও সময় চাইবেন বলে খবর বেরিয়েছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন প্রশ্নে পুনঃ ভোটাভুটির কথা ছিল। এখন সেটি পিছিয়ে যাবে বলে ধারণা।

সম্প্রদায় ও স্থানীয় সরকার বিষয়ক মন্ত্রী জেমস ব্রোকেনশায়ার বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ব্রেক্সিটের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে চলতি মাসের ২৭ বা ২৮ তারিখ এমপিদের আবারও ভোটাভুটির সুযোগ দিতে চায় সরকার। এসব ভোট ‘নন বাইন্ডিং’। অর্থাৎ এসব ভোটের ফলাফল মানতে বাধ্য নয় সরকার।

এদিকে গত সপ্তাহে লেবার নেতা জেরেমি করবিনের দেওয়া চিঠির জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মে। আজ সোমবার দেওয়া জবাবে প্রধানমন্ত্রী লেবার দলের দাবিগুলো আগের মত সরাসরি নাকচ করেননি। বরং তিনি করবিনের সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে আবারও আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে বৈঠকের কোনো দিনক্ষণ চিঠিতে জানানো হয়নি।