মিয়ানমারে স্বাধীনতার স্থপতির ভাস্কর্য ঘিরে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ

মিয়ানমারের স্বাধীনতার প্রধান স্থপতি জেনারেল অং সানের ভাস্কর্যকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে দেশটিতে। ছবি: এএফপি
মিয়ানমারের স্বাধীনতার প্রধান স্থপতি জেনারেল অং সানের ভাস্কর্যকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে দেশটিতে। ছবি: এএফপি

মিয়ানমারের স্বাধীনতার প্রধান স্থপতি জেনারেল অং সানের একটি ভাস্কর্যকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে দেশটিতে। চলতি মাসের ২ তারিখ ঘোড়ায় আরোহী অং সানের একটি ব্রোঞ্জের ভাস্কর্য স্থাপন করা হয় পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য রাজ্য কায়াহর রাজধানী লোয়াইকোতে।

রাজ্যটি কারেনি নামে বহুল পরিচিত। শুরু থেকেই এই ভাস্কর্যের বিরোধিতায় নামে রাজ্যের কারেনি নৃগোষ্ঠীর লোকজন। মঙ্গলবার দেশটির ইউনিয়ন ডেতে ভাস্কর্যবিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় কারেনি জনগোষ্ঠীর যুব সংগঠন কারেনি স্টেট ইয়ুথ ফোর্স। বিক্ষোভ দমনে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অনেক বিক্ষোভকারী আহত হন।

১৯৪৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে এক চুক্তির ভিত্তিতে গঠিত হয় যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত মিয়ানমার রাষ্ট্র। ওই চুক্তির প্রধান রূপকার ও ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের কবল থেকে মিয়ানমারের স্বাধীনতার প্রধান স্থপতি ছিলেন অং সান। এই চুক্তির আগেই আততায়ীর হামলায় নিহত হয়েছিলেন তিনি। মিয়ানমারের বর্তমান স্টেট কাউন্সেলর অং সাং সু চি তাঁর মেয়ে। ‘পাংলং চুক্তি’ নামের ওই চুক্তিতে মিয়ানমারের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী অধ্যুষিত রাজ্যগুলোকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার কথা ছিল।

কারেনি স্টেট ইয়ুথ ফোর্সের নেতা খুন থমাস বলেন, ‘আমরা জেনারেলের ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছি না। আমরা শুধু এসবের আগে তাঁর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।’ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও জলকামান নিক্ষেপ করেছে। গত বছরের মাঝামাঝি যখন এই ভাস্কর্য নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ, তখন থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছে সংগঠনগুলো। তখন থেকে এখন পর্যন্ত গতকালের বিক্ষোভ সমাবেশই সবচেয়ে বড় বলে জানা গেছে। আয়োজকেরা বলেন, অন্তত ৩ হাজার লোক জড়ো হয়েছিলেন। স্মার্টফোন ব্যবহার করে বিক্ষোভের ভিডিওচিত্র সরাসরি ফেসবুকে সম্প্রচার করা হয়।

কয়েক দশকের সামরিক শাসনের পর ২০১৬ সালে ক্ষমতায় বসে অং সান সু চির দল। শুরু থেকেই তিনি জনজাতিগুলোর সশস্ত্র দলগুলোর সঙ্গে শান্তি স্থাপন তাঁর শীর্ষ অগ্রাধিকারের তালিকায় রেখেছেন। সামনের বছর সাধারণ নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘুদের মধ্যে তাঁর দলকে ঘিরে ক্রমে অসন্তোষ বাড়ছে। মঙ্গলবারের বিক্ষোভও সে অসন্তোষেরই অংশ।