অস্ট্রেলিয়ায় সরকারি দলের ঐতিহাসিক পরাজয়

অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। ছবি: এএফপি
অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। ছবি: এএফপি

অস্ট্রেলিয়ায় গত ৮০ বছরে প্রথমবার দেশটির পার্লামেন্টে সরকারি দলের পরাজয় হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বছরের প্রথম পার্লামেন্ট অধিবেশনে দেশটির শরণার্থীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার একটি প্রস্তাবিত আইন পেশ করে বর্তমান সরকারি দল লিবারেল পার্টি। আর সংসদের ক্রসবেঞ্চারদের সঙ্গে দেশটির প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির ভোট আসে এই আইনের বিপক্ষে। ফলে সরকারি দলের প্রস্তাবিত আইনের বদলে বিরোধী দলের প্রস্তাবিত সংশোধিত নতুন আইন গ্রহণ করেছে সংসদ।

এই বিষয়ে আজ বুধবার সিনেটে আইন প্রণয়নের জন্য ভোট গ্রহণ করা হবে। তবে বিরোধী দলের প্রস্তাব আইনে পরিণত হওয়া ঠেকাতে সরকারি দলের যথেষ্ট সমর্থন না থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। দেশটিতে ১৯৪১ সালের পর এবারই সংখ্যাগরিষ্ঠদের দল হয়েও কোনো সরকারি দল সংসদীয় ভোটে পরাজিত হয়েছে।

পার্লামেন্টে সরকারি দলের পক্ষে প্রস্তাবিত আইন পেশ করেন অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। সংসদ পরিচালনা করেন স্পিকার টনি স্মিথ। বিরোধী দলের নেতৃত্বে ছিলেন লেবার পার্টির প্রধান নেতা বিল শর্টেন।

এ দিকে পার্লামেন্টে সরকারি দলের ঐতিহাসিক পরাজয়ের পর আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে লিবারেল পার্টির অবস্থান নিয়ে অস্ট্রেলিয়াজুড়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়। দলের অবস্থান শক্ত রাখতে কী করবে মরিসন সরকার, এমন প্রশ্নও সামনে আসছে। জাতীয় নির্বাচনের তারিখ এগিয়ে আনা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মরিসন বলেন, ‘হতেই পারে না। নির্বাচন নির্দিষ্ট সময়েই আসবে, আবার চলে যাবে। এটা আমাকে দুশ্চিন্তায় ফেলে না।’

তবে পার্লামেন্টে বিরোধী দলের আনা নতুন আইনটি উপযুক্ত নয় বলে দাবি করেছেন মরিসন। এ জন্য শর্টেনকে দোষারোপ করে তিনি বলেন, ‘তাঁদের (বিরোধী দলের) নীতিমালা অনুসরণ করলে সীমান্ত সুরক্ষা দুর্বল হয়ে পড়বে। এ সিদ্ধান্ত চোরাকারবারিদের জন্য সীমান্তের দরজা খুলে দেওয়ার মতো।’ মরিসনের বক্তব্যের বিরুদ্ধে শর্টেন পার্লামেন্টে বলেন, ‘শক্তিশালী সীমানা ব্যবস্থার পাশাপাশি আমরা আমাদের আশ্রয়ে থাকা শরণার্থীদের যত্ন নিতে পারি। জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রেখেও আমরা মানুষের প্রতি মানবিক আচরণ করতে পারি।’

তবে দেশটির অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সমর্থনে নিজেদের অবস্থান নিরাপদ করে নিয়েছে বিরোধী দল লেবার পার্টি। পার্লামেন্টের ভোটের ফলাফলের পর এমনটাই ধারণা করছেন দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডেভিড ক্রো। তিনি তাঁর এক প্রতিবেদনে বলেছেন, ‘গ্রিনস পার্টি ও ক্রসবেঞ্চারদের সমর্থনে সরকারি দলের ক্ষমতার চেয়ে নিজেদের শক্তিশালী করে তুলেছে লেবার পার্টি।’