নারী রাজনীতিকদের প্রতি এ কেমন আচরণ!

অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর নয়। দেশটির নারী রাজনীতিবিদেরা প্রায়ই বৈষম্য, বুলিং, যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ করে থাকেন। সম্প্রতি দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

এই যেমন, গত বছরের নভেম্বরে দেশটির ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম উদীয়মান তারকা জুলিয়া ব্যাংকস তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মীদের হতবিহ্বল করে দেন। তিনি লিবারেল পার্টি ছেড়ে স্বতন্ত্র হন। জুলিয়া অভিযোগ করেন, লিবারেল পার্টির সংস্কৃতি, জেন্ডার পক্ষপাত, বুলিং ও ভীতি প্রদর্শনের ঘটনায় তিনি রীতিমতো অসুস্থ।

জুলিয়ার পদক্ষেপকে ক্ষমতাসীন জোটের জন্য একটি আঘাত হিসেবেই দেখা হয়। কারণ, এতে সরকারের অবস্থা আরও নাজুক হয়।

তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, জুলিয়ার অভিযোগ তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মীদের জন্য লজ্জার বিষয়।

লিবারেল পার্টি যে যৌনবৈষম্যের আখড়ায় পরিণত হয়েছে, জুলিয়ার ঘটনার পর সেই ধারণা আরও জোরালো হয়।

এ তো গেল একটি ঘটনা; অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতিতে নারীর প্রতি বিরূপ আচরণের আরও অনেক ঘটনা সামনে এসেছে।

গত জানুয়ারিতে লিবারেল পার্টির কেলি ও’ডোয়ার তাঁর পদত্যাগের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন। গত বছর তিনি অভিযোগ করেন, ভোটাররা তাঁর পুরুষ সহকর্মীদের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেন।

দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে লিবারেল পার্টির সদস্যদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারী রয়েছেন। কিন্তু হতাশার বিষয় হলো নারী রাজনীতিবিদেরা পদে পদে হয়রানির শিকার হন বলে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে।

নারী রাজনীতিবিদের হয়রানির ব্যাপারে লিবারেল পার্টির খতিয়ান কলঙ্কজনক। তাদের হাত থেকে দেশটির প্রথম ও একমাত্র নারী প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ডও রেহাই পাননি। একসময় লিবারেল নেতা টনি অ্যাবোটের নোংরা আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন জুলিয়া।

অবশ্য দেশটির অন্য দলগুলোও ‘ধোয়া তুলসীপাতা’ নয়। অস্ট্রেলিয়ান গ্রিনস দলের সিনেটর সারাহ হানসন-ইয়াং এক স্বতন্ত্র প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, সম্প্রতি তাঁকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার রাজ্য ও স্থানীয় সরকার পর্যায়ের রাজনীতিতেও নোংরা পুরুষতান্ত্রিক আচরণের ঘটনা আছে।

দেশটির কিছু রাজনীতিবিদ মনে করেন, নতুন বিধির মাধ্যমে এই ধরনের যৌনবৈষম্যমূলক আচরণের লাগাম টেনে ধরা সম্ভব।