লেবার পার্টি থেকে ৭ এমপির পদত্যাগ

সদ্য পদত্যাগ করা লেবার পার্টির সাত এমপি। লন্ডন, ব্রিটেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি। ছবি: রয়টার্স
সদ্য পদত্যাগ করা লেবার পার্টির সাত এমপি। লন্ডন, ব্রিটেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন দেশটির পার্লামেন্টের সাত সদস্য (এমপি)। ব্রেক্সিট নিয়ে দলীয় নেতৃত্বের ব্যর্থতা এবং ইহুদিবিদ্বেষী মনোভাবকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ এনে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা দল ছাড়ার ঘোষণা দেন। পদত্যাগ করা সাত আইনপ্রণেতা হলেন চুকা উমুন্না, লুসিয়ানা বার্গার, ক্রিস লেজলি, অ্যাঞ্জেলা স্মিথ, মাইক গেইপস, গেভিন শুকার ও অ্যান কোফি।

লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন এক বিবৃতিতে বলেন, এসব আইনপ্রণেতা লেবার দলের নীতি বাস্তবায়নে একসঙ্গে কাজ অব্যাহত রাখতে অসমর্থ অনুভব করায় তিনি হতাশ। লেবার পার্টির নীতি ২০১৭ সালের নির্বাচনে লাখ লাখ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে এবং ১৯৪৫ সালের পর সবচেয়ে বেশি হারে দলের ভোট বৃদ্ধি করেছে।

লেবার পার্টির মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিবাদের বিষয়টি বেশ পুরোনো। নেতা জেরেমি করবিন দলের তৃণমূল সদস্যদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়। কিন্তু দলের আইনপ্রণেতাদের একটি অংশ শুরু থেকেই প্রকাশ্যে তাঁর নেতৃত্বের বিরোধিতা করে আসছে। এসব আইনপ্রণেতা চান লেবার পার্টি ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান তুলে ধরুক। কিন্তু করবিন সে পথে হাঁটছেন না। আবার করবিনের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি ইহুদিবিদ্বেষী মনোভাবকে প্রশ্রয় দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করে আসছেন তাঁর সমালোচকেরা।

ব্রেক্সিট নিয়ে মতবিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের সম্পর্কের সুতায় আরও টান লাগে। শেষ পর্যন্ত সাত আইনপ্রণেতার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে সেই সুতা ছিঁড়ে গেল। একসঙ্গে দল ত্যাগের ঘোষণা দিলেও তাঁরা পদত্যাগের কারণ হিসেবে ভিন্ন ভিন্ন কথা বলেছেন।

লসিয়ানা বার্গার বলেন, লেবার পার্টি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ইহুদিবিদ্বেষী হয়ে উঠেছে। তিনি এই দলের সঙ্গে থাকতে বিব্রত এবং লজ্জিত।

ক্রিস লেজলি বলেন, কট্টর বামপন্থীরা লেবার পার্টি গ্রাস করে নিয়েছে। মাইক গেইপস ব্রেক্সিট নিয়ে দলীয় অবস্থানের সমালোচনা করেন। আর চুকা উমুন্না নতুন ধারার রাজনীতির প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, চলমান রাজনীতির পরিবর্তন দরকার। রাজনীতির নতুন বিকল্প খুঁজতে অন্যদেরও তাঁদের সঙ্গী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

দলত্যাগী আইনপ্রণেতারা সংসদে স্বতন্ত্র একটি গ্রুপ হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করার ঘোষণা দিয়েছেন। লিবারেল ডোমোক্র্যাট দলে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন তাঁরা। ঘোষণা দিয়েছেন উদার মধ্যপন্থী নীতির নতুন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করার। ইতিমধ্যে তাঁরা স্বতন্ত্র গ্রুপ হিসেবে নিজস্ব ওয়েবসাইট এবং টুইটার অ্যাকাউন্ট চালু করেছেন। করবিন বিরোধী আরও আইনপ্রণেতা এই দলে যোগ দিতে পারেন বলে গুঞ্জন আছে।

ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলেও ব্রেক্সিট নিয়ে মতবিরোধ চরমে। ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন নিয়ে দলের যে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দলটিতে ভাঙন ধরাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।