আপত্তিকর মন্তব্যে বরখাস্ত পাকিস্তানের মন্ত্রী

পাঞ্জাবের তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী ফায়জুল হাসান চৌহান
পাঞ্জাবের তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী ফায়জুল হাসান চৌহান

হিন্দুধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানের পাঞ্জাবের তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী ফায়জুল হাসান চৌহানকে। ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) গুরুত্বপূর্ণ নেতা তিনি। পাঞ্জাব প্রদেশেও পিটিআই ক্ষমতায়।

গতকাল মঙ্গলবার ফায়জুল হাসান চৌহান পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ওসমান বুজদারের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেন। সঙ্গে সঙ্গে ইস্তফা গৃহীত হয়। তাঁর দলের তরফে টুইটারে জানানো হয়, ফায়জুল হাসান চৌহানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

টুইটারে লেখা হয়েছে, তথ্যমন্ত্রীর পদ থেকে চৌহানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারও বিশ্বাস নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা উচিত নয়। পাকিস্তানের ভিত্তিই হলো সহিষ্ণুতা।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় দেশটির সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়। আত্মঘাতী হামলায় সিআরপিএফের অন্তত ৪৯ জন জওয়ান নিহত হন। আহত ৪১ জন। সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদ (জেইএম) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। এ খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতেই তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী ফায়জুল হাসান চৌহানের তরফ থেকে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়।

পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার পরে ভারত যে বিবৃতি দিয়েছিল, তার জবাবেই চৌহান হিন্দুদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। পরে মন্ত্রীর ওই মন্তব্যের ভিডিও পাকিস্তানে ভাইরাল হয়। তার হ্যাশট্যাগ ছিল ‘স্যাকফয়াজচৌহান’। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও ওই মন্তব্যকে ভালোভাবে নেননি। চৌহান পদত্যাগ করার আগে ইমরানের বিশেষ সহকারী নাইমুল হক টুইট করেন, ‘আমাদের দল এই ধরনের মন্তব্য বরদাশত করবে না।’

তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রীর পদে থেকে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করায় ক্ষুব্ধ হন খোদ প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ‘হ্যাশট্যাগস্যাকফয়াজচৌহান’–এ রাশি রাশি অভিযোগ জমা পড়ে মন্ত্রী ফায়জুলের বিরুদ্ধে।

চৌহানের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে কথা জানিয়ে নাইমুল হক লেখেন, পাঞ্জাবের তথ্যমন্ত্রী হিন্দু সম্প্রদায় সম্পর্কে যে অপমানজনক মন্তব্য করেছেন, সে জন্য তাঁর কড়া শাস্তি হওয়া উচিত।

পাকিস্তানের ডন অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চৌহান দাবি করেছিলেন, তাঁর মন্তব্য ছিল শুধু ভারতের হিন্দুদের লক্ষ্য করে। কিন্তু ওই বক্তব্য ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় অনেকেই সমালোচনা শুরু করেন। তাঁকে বরখাস্তের দাবি ওঠে। পাকিস্তান সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার চাপের মুখে ২৪ ঘণ্টায় কাজ হয়েছে। তাঁকে বরখাস্ত করার পর টুইটারে ভারত ও পাকিস্তানের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা তেহরিক–ই–ইনসাফের প্রশংসা করছে।