মাসুদ আজহারের ভাই ও ছেলে আটক

পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদের (জেইএম) প্রধান মাসুদ আজহারের ভাই মুফতি আবদুল রাউফ ও ছেলে হামাজ আজহারকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এ নিয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলোর ৪৪ জন সদস্যকে আটক করা হলো। ডন ও এনডিটিভির খবরে এ তথ্য জানানো হয়।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, কয়েকটি সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ওই সব সংগঠনের সঙ্গে জড়িত—এমন ব্যক্তিদের সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে আটক করা হয়েছে। ৪ মার্চ সব প্রাদেশিক সরকারের প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে আটকপ্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেহরিয়ার আফ্রিদি ও স্বরাষ্ট্রসচিব আজম সুলেমান খানও এ তথ্য জানিয়েছেন।

জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জেইএমের আত্মঘাতী বোমা হামলায় ভারতীয় আধা সামরিক বাহিনীর ৪০ সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ভারত বেশ কিছু নামের তালিকা পাকিস্তানের হাতে তুলে দিয়েছে। ওই তালিকায় রাউফ ও হামাজের নাম রয়েছে। এ ছাড়া আটক ব্যক্তিদের মধ্যেও তালিকায় থাকা বেশ কয়েকজন রয়েছে।

বিষয়টি স্বীকার করে স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, এর মানে এই নয় যে তালিকায় যাদের নাম রয়েছে, শুধু তাদেরই ধরা হচ্ছে। তিনি জানান, তাঁরা শুধু একটি সংগঠনের বিরুদ্ধেই কাজ করছেন না।

জাতিসংঘের পথ অনুসরণ করে এক দিন আগে জঙ্গি সংগঠনগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির প্রক্রিয়া শুরু করে পাকিস্তান। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ ফয়সাল জানিয়েছেন, নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর সম্পদসহ সবকিছু দখলে নিয়েছে প্রশাসন।

ভারতের আধা সামরিক বাহিনীর ওপর জঙ্গি হামলার জের ধরে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ঢুকে বালাকোটে জঙ্গিশিবিরে বড় ধরনের হামলা চালায় ভারত। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়। ভারতের দাবি, পাকিস্তানের ভূমি ব্যবহার করে জঙ্গি সংগঠনগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার ঘটনায় পাকিস্তানের ওপর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়। চাপে পড়েই সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে পাকিস্তান। তবে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো ধরনের চাপ থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।

জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) জঙ্গি দমনে পদক্ষেপ নিতে পাকিস্তানকে সময় বেঁধে দিয়েছে। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিতে না পারলে পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। এতে পাকিস্তানের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আন্তর্জাতিক ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রেও সংকটে পড়তে হতে পারে দেশটিকে।