সীমান্তে বিএসএফের পরিবর্তে এসএসবি মোতায়েনের দাবি

কলকাতায় ‘সীমান্তে সীমাহীন যন্ত্রণা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জী
কলকাতায় ‘সীমান্তে সীমাহীন যন্ত্রণা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জী

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে থাকা বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) পরিবর্তে সীমা সুরক্ষা বল-এসএসবি (উন্নততর বাহিনী) মোতায়েনের দাবি উঠেছে। কলকাতার মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) ও আমরা সীমান্তবাসী সংগঠন এ দাবি করেছে। গতকাল মঙ্গলবার কলকাতায় এ দুই সংগঠন ‘সীমান্তে সীমাহীন যন্ত্রণা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। সেখানেই এ দাবি ওঠে।

গতকালের আলোচনা সভায় যোগ দেন সীমান্তে বিভিন্ন ঘটনা, বিশেষ করে ধর্ষণ এবং বিভিন্ন ঘটনায় নির্যাতিত এই রাজ্যের বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী।

আলোচকেরা তাঁদের অভিযোগের কথা তুলে ধরে দাবি তোলেন, ভারতের বিএসএফ প্রকৃত সীমান্তে ফিরে যাক। কৃষিকাজে, মাছ ধরায় এবং রাস্তায় চলাচলে বাধা বন্ধ হোক। সীমান্তের ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত বিএসএফের কর্মকর্তা ও জওয়ানদের দেশের ফৌজদারি আদালতের আওতায় আনা হোক। দোষী প্রমাণিত হলে তাঁদের শাস্তি দেওয়া হোক, বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তে বিএসএফের পরিবর্তে এসএসবি মোতায়েন করা হোক। সীমান্তের বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ সীমান্ত থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে সর্বাধিক ব্যয় হবে।

এই আলোচনা সভায় অংশ নেন মাসুমের সাধারণ সম্পাদক কিরীটি রায়, সিপিআই নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, তেলেঙ্গানা রাজ্যের রাজধানী হায়দরাবাদের জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সরফরাজ আহমেদ, সিপিএমের (লিবারেশন) নেতা ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী দিবাকর ভট্টাচার্য প্রমুখ।

আলোচকেরা বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে ২ হাজার ২১৭ কিলোমিটার। ভারত-বাংলাদেশ স্থলসীমান্ত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম। এখন এই সীমান্তে ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বিএসএফ থাকায় সীমান্ত এলাকার লোকজনদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকার জমিতে চাষ করতে গেলে ভারতীয়দের বিএসএফের অনুমতি নিয়ে জমিতে যেতে হয়। তাই সীমান্তবাসী চাইছে বিএসএফের অবস্থান সীমান্তের কাছাকাছি করা হোক।

বক্তারা এ কথাও বলেন, শুধু বিএসএফের গুলিতে প্রতিবছর ২০০ মানুষের প্রাণহানি হয়। এর মধ্যে আবার পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ সীমান্তে মারা যায় প্রায় ১০০ জন। সীমান্তের পাহারাদার বিএসএফ জওয়ানরা অবাঙালি হওয়ায় তাঁদের সঙ্গে ভাষাগত জটিলতায় প্রতিনিয়ত সমস্যারও সৃষ্টি হয়। তাই আলোচকেরা বাংলাভাষী বিএসএফ জওয়ানদের সীমান্তে নিয়োগ করার দাবি জানান।

বক্তারা অবিলম্বে সীমান্তে নারী পাচারসহ অনুপ্রবেশ বন্ধ, সেতু-সড়ক নির্মাণ, পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা উন্নতকরণ, সীমান্তে বিদ্যুতায়ন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন করার দাবিও তোলেন।