ভারতে হামলায় জইশকে ব্যবহার করেছে আইএসআই

পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোশাররফ।
পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোশাররফ।

ভারতে হামলা চালাতে জইশ-ই-মুহাম্মদকে ব্যবহার করেছে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ বলেছেন এ কথা। তাঁকে জইশ-ই-মুহাম্মদের জঙ্গিরা দুবার হত্যার চেষ্টা করেছিল বলেও জানান তিনি।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ গতকাল বুধবার বলেছেন, জইশ-ই-মুহাম্মদ একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। তাঁর দেশের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এই সংগঠনকে ব্যবহার করে ভারতে হামলা চালিয়েছিল। তাঁর শাসনামলে এ ঘটনা ঘটেছিল। ১৯৯৯ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন পারভেজ মোশাররফ। পাকিস্তানের হাম নিউজের সাংবাদিক নাদিম মালিককে টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জইশ-ই-মুহাম্মদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। পারভেজ মোশাররফ বলেন, ২০০৩-এর ডিসেম্বরে তাঁকে দুবার হত্যার চেষ্টা করেছিল জইশ-ই-মুহাম্মদ। তিনি বলেন, এত কিছু সত্ত্বেও জইশের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি নিজেও কোনো উদ্যোগ নেননি।

নাদিম মালিক পারভেজ মোশাররফের সাক্ষাৎকারের ভিডিও শেয়ার করেছেন তাঁর ফেসবুক ও টুইটারে।

নাদিম পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্টের কাছে জানতে চান, আপনি নিজের শাসনামলে জঙ্গি সংগঠন জইস-ই-মুহাম্মদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেননি। উত্তরে পারভেজ মোশাররফ বলেন, তখন সময় ভিন্ন ছিল।

ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তে সাম্প্রতিক সময়ে আবার উত্তেজনা তৈরি হয়। সংকটের শুরু ১৪ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় দেশটির আধা সামরিক সিআরপিএফের গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলায় ৪০ জনের বেশি জওয়ান নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদ হামলার দায় স্বীকার করে। এ ঘটনার ১২ দিন পর ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারত। নয়াদিল্লির দাবি, ওই হামলায় পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মুহাম্মদের বড় ঘাঁটি গুঁড়িয়ে গেছে। নিহত হয়েছে ৩০০ জঙ্গি। জঙ্গি ঘাঁটিতে আকাশপথে মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী। কিন্তু ওই হামলায় এখন পর্যন্ত মাত্র একজনের আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বলে দাবি হামলাস্থল পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের বালাকোটের বাসিন্দাদের। এরপরই প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জঙ্গিদের লাশ কই। তবে ইতালির এক সাংবাদিক দাবি করেছেন, ভারতের আঘাত হানা জায়গা থেকে কয়েকটি দেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ওই হামলার পর জইশ-ই-মুহাম্মদের জঙ্গিদের ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে ইমরান খান নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান সরকার। সংগঠনের প্রধান মাসুদ আজহারের ছেলে ও ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে হাফিজ সাঈদের সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়াকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।