কংগ্রেসের মুসলিম সদস্যের নিন্দাজ্ঞাপক প্রস্তাব উঠছে না

কংগ্রেস সদস্য ইলহান ওমরের কথিত ইহুদিবিদ্বেষী ও ইসরায়েলবিরোধী বক্তব্যের নিন্দা করে একটি প্রস্তাব বৃহস্পতিবার ভোটে দেওয়ার কথা জানিয়েছিল মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্রেটিক নেতৃত্ব। তবে নিজ দলের সদস্যদের প্রতিবাদের মুখে প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হচ্ছে না। কবে উত্থাপিত হবে, সেটাও নিশ্চিত নয়।

জানা যায়, দলের প্রগতিশীল ও কৃষ্ণাঙ্গ সদস্যরা কংগ্রেসের একজন মুসলিম সদস্যকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে নিন্দাজ্ঞাপক প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেন। এক দলীয় বৈঠকে তাঁরা প্রশ্ন করেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও একাধিক রিপাবলিকান নেতা মুসলিম, হিস্পানিক ও আফ্রিকান-আমেরিকানদের ব্যাপারে বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য সত্ত্বেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়নি। এখন ইলহান ওমরের বিরুদ্ধে কেন এ ধরনের প্রস্তাব আনা হবে?

মিনেসোটা থেকে নির্বাচিত সোমালিয়া থেকে আগত এই কংগ্রেস সদস্য প্যালেস্টাইনের সমর্থনে ও ইসরায়েলের সমালোচনায় তাঁর বক্তব্যের জন্য আগে থেকেই রক্ষণশীলদের আক্রমণের শিকার হয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি ইহুদি লবিং গ্রুপ এইপ্যাকের সমালোচনা করে বলেছিলেন, মার্কিন রাজনীতিতে তাঁদের অর্থের প্রভাব রয়েছে। তিনি এমন কথাও বলেছিলেন, কোনো কোনো রাজনীতিক বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে আসছেন। নাম উচ্চারণ না করলেও বিদেশি বলতে যে তিনি ইসরায়েলকে বুঝিয়েছেন, তাতে কোনো সন্দেহ ছিল না। ক্ষুব্ধ রিপাবলিকান নেতারা শুধু নিন্দা নয়, ওমরকে প্রতিনিধি পরিষদের বৈদেশিক কমিটির সদস্যপদ কেড়ে নেওয়ার দাবিও তোলেন।

নিন্দাজ্ঞাপক খসড়া প্রস্তাবে প্রথমে ইলহান ওমরের নাম ঊহ্য রেখে শুধু সব ধরনের ইহুদিবিদ্বেষী বক্তব্যের নিন্দা করা হয়। পরে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রগতিশীল অংশের প্রতিবাদের মুখে তাতে ইসলামবিদ্বেষী বক্তব্যেরও নিন্দা করা হয়। তা সত্ত্বেও দলের সব সদস্য এ প্রস্তাব সমর্থনে তাঁদের অপারগতা প্রকাশ করেন। বুধবার সন্ধ্যায় সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স এক বিবৃতিতে এ ধরনের প্রস্তাবকে ‘ভ্রান্ত’ বলে উল্লেখ করেন। সিনেটর কমলা হ্যারিসও এবং সিনেটর এলিজাবেথ হ্যারিসও প্রস্তাবটির বিরোধিতা করেন।

ডেমোক্রেটিক সূত্র বলছে, আপাতত কোনো প্রস্তাব ভোটে উঠছে না। কবে উঠবে তা–ও তাঁরা জানাননি। এ ঘটনার ফলে দলের পুরোনো-নতুন এবং মধ্যপন্থী ও উদারনৈতিক অংশের মধ্যে পুরোনো বিভেদ যেভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, তা স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।