ভারতের নির্বাচনে পাহারা বসাচ্ছে ফেসবুক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় ছিল ফেক নিউজ। এ নিয়ে নানান আলোচনা ও সমালোচনা নির্বাচনের পরেও চলছে। সেই আলোচনা–সমালোচনা এবার বিশ্বের বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে না হয়, সে জন্য ব্যবস্থা নেবে ফেসবুক। ৫৪৩ আসনের নির্বাচন ঘিরে কেউ যেন গুজব ও ভুয়া খবর ফেসবুকে ছড়াতে না পারে, সে জন্য তৎপর ফেসবুক। এ জন্য ভারতে পর্যবেক্ষণকেন্দ্র (অপারেশন সেন্টার) খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক।

ইকোনমিক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হবে আগামী ১১ এপ্রিল থেকে। এরপর ছয় ধাপে এপ্রিল ও মে মাসজুড়ে চলবে নির্বাচন। সাত ধাপে নির্বাচন শেষে আগামী ২৩ মে ভোটের ফল ঘোষণা হবে। সেই নির্বাচন উপলক্ষে ফেসবুক নয়াদিল্লিতে পর্যবেক্ষণকেন্দ্র চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পুরো নির্বাচনে ফেসবুককে ব্যবহার করে যেন কেউ ভুয়া খবর ছড়াতে না পারে, এই কেন্দ্র থেকে তা পর্যবেক্ষণ করা হবে। তবে ভারতে ফেসবুকের পর্যবেক্ষণকেন্দ্র কবে খোলা হবে বা কবে থেকে চালু হচ্ছে, তা জানা যায়নি।

ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার পাবলিক পলিসি পরিচালক শিবনাথ থুকরাল বলেছেন, ভারতের নয়াদিল্লিতে ফেসবুক অপারেশন সেন্টার খুলবে। ফেসবুকের প্রধান কার্যালয় মেনলো পার্ক (ক্যালিফোর্নিয়া), ডাবলিন (আয়ারল্যান্ড) এবং সিঙ্গাপুর কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এ পর্যবেক্ষণকেন্দ্র থেকে ২৪ ঘণ্টা নির্বাচন নজরদারি করা হবে। ভারতের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়াতে পারবে না—এই উদ্যোগের মাধ্যমে ফেসবুক সেটা নিশ্চিত করতে চায়। এ ব্যাপারে ভারতের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে ফেসবুক তাদের সহযোগিতা করে যাবে।

ভারতে বিগত নির্বাচনগুলোর সময় ফেসবুকে অনেক ভুয়া খবর ছড়ানো হয়েছিল। এ জন্য জনপ্রিয় এ মাধ্যম ব্যাপকভাবে সমালোচনার মধ্যে পড়ে। তবে এবার সে সুযোগ থাকছে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ফেসবুক।

গতকাল রোববার ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সুনীল অরোরা সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। সে সময় তিনি বলেন, ফেসবুক, টুটটার, হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগের সব মাধ্যম রাজনৈতিক দলগুলোর বিঞ্জাপন প্রচারের আগে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলবেন। এ ছাড়া ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে সামাজিক যোগাযোগ ‘সাইলেন্স প্রিয়ড’–এ চলে যাবে।

এপ্রিল ও মে মাসের সাতটি দিনে সাত দফায় লোকসভার মোট ৫৪৩টি আসনের ভোট গ্রহণ হবে। এই তারিখগুলো হলো ১১ এপ্রিল, ১৮ এপ্রিল, ২৩ এপ্রিল, ২৯ এপ্রিল, ৬ মে, ১২ মে ও ১৯ মে। আর ২৩ মে ফল ঘোষণা করা হবে। ভারতে লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি বিধানসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে অন্ধ্র প্রদেশ, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ ও ওডিশা রাজ্যে।

প্রায় ৯০ কোটি ভোটার এবারের লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেবেন। এবারের লোকসভা নির্বাচনে মোট ১০ লাখ ভোটকেন্দ্র থাকবে। গতবারের চেয়ে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন ৮ কোটির বেশি ভোটার।

বর্তমান লোকসভার মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ৩ জুন। লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে জয়ী হতে হবে ২৭২টি আসনে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি ২৮২টি আসনে জয় পেয়েছিল। সব মিলিয়ে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পেয়েছিল ৩৩৬টি আসন। আর দুই দফা সরকার গঠনের পর মাত্র ৪৪টি আসনে জয়ী হতে পেরেছিল কংগ্রেস।