হেরে চলা শ্যামবাবুর ২৯তম লড়াই

শ্যামবাবু সুবুধি। ছবি: সংগৃহীত
শ্যামবাবু সুবুধি। ছবি: সংগৃহীত

পেশায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক। নাম শ্যামবাবু সুবুধি। বয়স ৮৪ বছর। থাকেন ভারতের ওডিশা রাজ্যের গঞ্জাম জেলায়। ৬২ বছর ধরে তিনি বিভিন্ন নির্বাচনে লড়ছেন। জিতেননি কোনো দিন। হেরেই যাচ্ছেন। তবু নির্বাচনী ময়দান ছাড়েননি। একসময় বিবিসি তাঁকে ‘ওয়ার্ল্ড বিগেস্ট লুজার’ তকমাও দেয়। ৮৪ বছরের এই ‘তরুণ’ এবার ২৯ তমবারের মতো নির্বাচনে লড়ছেন।

১৯৫৭ সাল থেকে শ্যামবাবু রয়েছেন নির্বাচনী ময়দানে। প্রথমবার লড়েছিলেন হিঞ্জিলি বিধানসভা আসন থেকে। ওই বছর তিনি প্রথম লড়েন রাজ্যের এক সাবেক মন্ত্রী বৃন্দাবন নায়েকের বিরুদ্ধে, নির্দল প্রার্থী হিসেবে। এতে তিনি হেরে যান।

পরবর্তী সময় শ্যামবাবু যতবার লড়েছেন, ততবারই লড়েছেন নির্দল প্রার্থী হিসেবে। টিকিট কাটেননি কোনো রাজনৈতিক দলের।

এবারও শ্যামবাবু লড়ছেন সেই নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে। লোকসভা নির্বাচনে ওডিশার গঞ্জাম জেলার দুটি আসনে লড়ছেন তিনি। একটি আসন আসকা, অন্যটি বেহরামপুর।

সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, লোকসভায় শ্যামবাবু প্রথম প্রার্থী হন ১৯৬২ সালে। এরপর তিনি বহু নির্বাচনে লড়েছেন। বলেছেন, এবারও লোকসভায় লড়বেন।

নির্বাচনে লড়ার ব্যাপারে শ্যামবাবু সব সময় পরিবারের সহযোগিতা পেয়েছেন। স্ত্রী তাঁর পাশে থেকেছেন। তিনি পাশে পেয়ে এসেছেন তাঁর দুই ছেলে ও দুই মেয়েকে।

ছেলে-মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। স্ত্রী প্রয়াত হয়েছেন গত বছর।

এবারও ক্ষান্ত হননি শ্যামবাবু। যথারীতি নির্বাচনী ময়দানে নেমে পড়েছেন তিনি। অর্থসহ নানাভাবে তাঁকে সাহায্য করছেন তাঁর হিতাকাঙ্ক্ষীরা।

শ্যামবাবু বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত, অন্তত একবার আমি নির্বাচনে জয়ী হব।’

সেই জয় এবারও হতে পারে বলে আশাবাদী শ্যামবাবু।

শ্যামবাবু সাংবাদিকদের বলেন, ইতিমধ্যে তিনি লড়েছেন ওডিশার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিজু পট্টনায়েক, জে বি পট্টনায়েক, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামচন্দ্র রথ, চন্দ্রশেখর সাহুসহ অনেকের বিরুদ্ধে। এই তালিকায় আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী পি ভি নরসীমা রাও।

শ্যামবাবু জানিয়েছেন, এখনো তিনি তাঁর চেম্বারে নিয়মিত রোগী দেখেন। রোগী দেখার আয়ের একটি অংশ তিনি ভবিষ্যৎ নির্বাচনের জন্য জমা করে রাখেন। তা ছাড়া প্রতিবছরই তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরা নির্বাচনী খরচ নির্বাহের জন্য তাঁকে আর্থিক অনুদান দিয়ে থাকেন।

শ্যামবাবু বলেন, ‘নির্বাচন থেকে আমাকে বিরত রাখার জন্য পরিবার কখনো আপত্তি করেনি। সারা জীবন আমাকে সহযোগিতা করে এসেছেন আমার প্রয়াত স্ত্রী। যত দিন আমার শরীর ভোটে দাঁড়াতে অনুমতি দেবে, তত দিন আমি লড়ে যাব। আমার বিশ্বাস, একদিন আমি জিতব। এবারও সেই জয় আসতে পারে আমার ভাগ্যে।’