উত্তর-পূর্ব ভারতে সংখ্যায় বাড়লেও মনোনয়নে অবহেলিত নারীরা

উত্তর-পূর্ব ভারতে ভোটার হিসাবে নারীরা সংখ্যায় বাড়লেও দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে অবহেলিত। ছবি: সংগৃহীত
উত্তর-পূর্ব ভারতে ভোটার হিসাবে নারীরা সংখ্যায় বাড়লেও দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে অবহেলিত। ছবি: সংগৃহীত

উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজনীতিতে নারীরাই নির্ণায়ক শক্তি। ভোটার হিসাবে নারীরা সংখ্যায় বাড়ছেন। অথচ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা উপেক্ষিতই রয়ে গেছেন। এ অঞ্চলের ২৫টি আসনেই পুরুষ প্রার্থীদের জয়জয়কার। নারীদের উপেক্ষা করার ক্ষেত্রে কংগ্রেস ও বিজেপি একই সারিতে। আঞ্চলিক দলগুলোও একই পথের পথিক।

জনজাতি অধ্যুষিত এই অঞ্চলের বহু জনগোষ্ঠী এখনো মাতৃতান্ত্রিক। তবু বর্তমান লোকসভায় নারী সদস্য মাত্র দুজন। যুযুধান বিজেপি ও কংগ্রেসের একজন করে সাংসদ রয়েছেন বিদায়ী লোকসভায়।

প্রায় দিন দশক আগে ভারতের জাতীয় সংসদে পেশ হয় নারী সংরক্ষণ বিল। ওই বিলে বলা হয়, নারীদের জন্য লোকসভা এবং বিধানসভায় ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করা হবে। কিন্তু সেই বিল আজও পাস হয়নি জাতীয় সংসদে। প্রতিবারই ভোটের সময় নারী সংরক্ষণ বিল নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির হাতিয়ার হলেও ভোট শেষে নারী ইস্যুটি ধামাচাপা পড়ে যায়। বাম বা ডান, সবাই দোষারোপ আর পাল্টা দোষারোপেই আটকে রেখেছেন নারী সংরক্ষণের বিষয়টি। বেশির ভাগ দলই প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ তো দূরঅস্ত, ৩ শতাংশও নারীদের জন্য ছাড়তে নারাজ।

উত্তর-পূর্ব ভারতের আট রাজ্যের মধ্যে চার রাজ্যেই নারী ভোটার পুরুষদের চেয়ে বেশি। অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, মেঘালয় ও মিজোরাম এই চার রাজ্যে বর্তমানে একজনও নারী সাংসদ নেই। এই অঞ্চলের দুজন নারী লোকসভা সদস্যের মধ্যে দুজনই আসামের। একজন সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সুস্মিতা দেব এবং অপরজন সাবেক মন্ত্রী বিজেপির বিজয়া চক্রবর্তী। তবে বিজয়া এবার লোকসভা ভোটে টিকিট পাননি। তাঁর কেন্দ্র গুয়াহাটিতে বিজেপি প্রার্থী করেছে আরেক নারী কুইন ওঝাকে। সুস্মিতা অবশ্য এবারও দলের টিকিট পেয়েছেন। বিজেপির অপর নারী প্রার্থী ত্রিপুরার প্রতিমা ভৌমিক। কংগ্রেসেরও অপর নারী প্রার্থী ত্রিপুরারই, প্রজ্ঞা দেববর্মণ। আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যে আসামের বিপিএফ এবার প্রার্থী করেছে রাজ্যের সমাজকল্যাণমন্ত্রী প্রমীলা রানী ব্রহ্মকে। আর মেঘালয়ে এনপিপি ফের প্রার্থী করেছে ভারতের সাবেক মন্ত্রী ওগাস্থা সাংমাকে।

ভারতের প্রতি হাজার পুরুষের বিপরীতে নারী ভোটারের সংখ্যা ৯৫৮। কিন্তু উত্তর-পূর্ব ভারতে এই হার প্রতি হাজারে ৯৭১। শুধু তা-ই নয়, অরুণাচল প্রদেশে প্রতি হাজার পুরুষের বিপরীতে নারী ভোটার ১০২৩। প্রায় একই ছবি মেঘালয় (১০২৩), মণিপুর (১০৫৪) ও মিজোরামেও (১০৫৪)। ত্রিপুরা (৯৭৩) ও নাগাল্যান্ডের (৯৮৩) নারীদের সংখ্যাও ভারতের জাতীয় হারের তুলনায় বেশি। শুধু আসাম (৯৫৫) আর সিকিমে (৯৫৮) নারীরা ভারতের জাতীয় হারের সমান।