রাশিয়ার সঙ্গে আঁতাত করেননি ট্রাম্প: মুলার

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফ্লোরিডা, যুক্তরাষ্ট্র, ২৪ মার্চ ২০১৯। ছবি: রয়টার্স
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফ্লোরিডা, যুক্তরাষ্ট্র, ২৪ মার্চ ২০১৯। ছবি: রয়টার্স

২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারকাজে ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে গোপন আঁতাত করেননি বলে বিশেষ কাউন্সেলের প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে। ওই নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ট্রাম্প। হিলারিকে হারাতে ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছিলেন বলে বড় ধরনের অভিযোগ ওঠে। গতকাল রোববার কংগ্রেসে বিশেষ কাউন্সেল রবার্ট মুলার প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদনটি হতাশ করেছে ডেমোক্র্যাটদের। তাঁরা পুরো প্রতিবেদনটি দেখার দাবি জানিয়েছেন।

আজ সোমবার বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, কংগ্রেসের জন্য প্রতিবেদনটির সারসংক্ষেপ তৈরি করেন দেশটির প্রধান আইন কর্মকর্তা উইলিয়াম বার।

এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প টুইটে লিখেছেন, ‘কোনো গোপন আঁতাত নেই, কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই।’

এর আগে বহুবার ট্রাম্প এই তদন্তকে ‘ডাইনির শিকার’ বলে মন্তব্য করেছেন। গতকাল এই তদন্তকে ‘অবৈধভাবে মর্যাদাহানির ব্যর্থ চেষ্টা’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘এটা লজ্জাজনক যে দেশকে এর মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।’

বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুলার। ছবি: রয়টার্স
বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুলার। ছবি: রয়টার্স

দুই বছরের তদন্তের পর প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন মুলার। প্রতিবেদনে প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সাবেক সহযোগীর সাজা ভোগ ও অভিযুক্ত হওয়ার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হয়েছে।

মুলার বলেছেন, ‘যেহেতু প্রতিবেদনে এই সিদ্ধান্তে আসা যায়নি যে প্রেসিডেন্ট অপরাধ করেছেন, তাই তাঁকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টিও এখানে আসে না।’

প্রতিবেদনটির ওপর উইলিয়াম বারের লেখা সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা রাশিয়ার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছেন বা জেনে–বুঝে রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন—এমন কিছু খুঁজে পাননি বিশেষ কাউন্সেল।

সারসংক্ষেপের দ্বিতীয় অংশে বিচারে বাধা দেওয়ার ইস্যুটি উল্লেখ করা হয়। বার বলেন, বিশেষ কাউন্সেলের প্রতিবেদনটি প্রচলিত বিচারব্যবস্থা অনুসারে কোনো রায় নয়।

বিচারে প্রেসিডেন্ট বাধা দিয়েছেন—এমন অভিযোগ প্রমাণে যথেষ্ট সাক্ষ্য ছিল না। তিনি জানান, পুরো প্রতিবেদন থেকে তিনি আরও কিছু তথ্য প্রকাশ করবেন। তবে কিছু তথ্য প্রকাশে বিধিনিষেধ রয়েছে।

এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ডেমোক্র্যাট ন্যান্সি পেলোসি এবং সিনেটে ডেমোক্রেটিক নেতা চাক শুমার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, উইলিয়াম বারের লেখা সারসংক্ষেপে দেওয়া উত্তরের মধ্যেই অনেক প্রশ্ন রয়েছে।

অন্যদিকে, এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর ট্রাম্প শিবিরে জয়ধ্বনি শুরু হয়ে গেছে। রিপাবলিকান সিনেটর মিট রমনি এটিকে ‘সুসংবাদ’ উল্লেখ করে টুইটারে লেখেন, ‘এখন সময় দেশকে আরও এগিয়ে নেওয়ার।’

হোয়াইট হাউসের তথ্যসচিব সারাহ স্যান্ডার্স প্রতিবেদনটিকে ‘অভিযোগ থেকে প্রেসিডেন্টের সম্পূর্ণ মুক্তি’ বলে মন্তব্য করেন।

প্রতিবেদন সম্পর্কে ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি জিলিয়ানি বলেন, তাঁর প্রত্যাশার চেয়ে প্রতিবেদনটি ভালো হয়েছে।