শতাব্দী রায়কে ভালোই টক্কর দিতে হবে

শতাব্দী রায়
শতাব্দী রায়

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস এবার পাঁচ চলচ্চিত্র তারকাকে মনোনয়ন দিয়েছে। তাঁরা হলেন দেব, মুনমুন সেন, মিমি চক্রবর্তী, নুসরাত জাহান ও শতাব্দী রায়। তাঁদের মধ্যে নতুন হিসেবে নির্বাচনী ময়দানে নেমেছেন দুই উঠতি নায়িকা মিমি চক্রবর্তী ও নুসরাত জাহান। মুনমুন সেন ও দেব এবার দ্বিতীয়বারের জন্য মাঠে নেমেছেন। শতাব্দী রায় নেমেছেন তৃতীয়বারের জন্য। শতাব্দী রায় মনোনয়ন পেয়েছেন বীরভূম আসনে।

শতাব্দী রায় রাজনীতিতে আসেন ২০০৯ সালে। এলাকায় এবার তাঁকে নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তিনি প্রায়ই কলকাতায় থাকেন। এলাকায় তেমন একটা আসেন না। গত নির্বাচনে যে পাঁচজন তারকা মনোনয়ন পেয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে কম ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন শতাব্দী রায়। ২০১৪ সালে তিনি পেয়েছিলেন ৪ লাখ ৬০ হাজার ৫৬ ভোট। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএমের এলাহি কামরে মোহাম্মদ পেয়েছিলেন ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩০৫ ভোট। বিজেপি প্রার্থী জয় ব্যানার্জি পেয়েছিলেন ২ লাখ ৩৫ হাজার ৭৫৩ ভোট। এবার এ আসনে তাঁকে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে।

বীরভূম অনুব্রত মণ্ডলের জেলা। তিনি এ জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি। দারুণ দাপুটে নেতা তিনি। বেফাঁস মন্তব্যে এখনো তিনি সেরা এ রাজ্যে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এ জেলার জেলা পরিষদের ৪২টি আসনে কোনো বিরোধী দল মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেনি। জেলা পরিষদের ৪২টি আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল তৃণমূল। এ রকম ঘটনা ঘটলে শতাব্দী রায়ের জন্য সুবিধা। তা না হলে তাঁকে জিততে বড় বাধা পেরোতে হবে। তাঁর দুই প্রতিদ্বন্দ্বীই এবার শক্তিশালী।

শতাব্দী রায় নির্বাচনী ময়দানে নেমে পড়েছেন। তিনি বলছেন, ‘গত ১০ বছরে আপনারা আমাকে সুযোগ দিয়েছেন আপনাদের সেবা করার। আমার বিশ্বাস, আপনাদের ভালোবাসা ও বিশ্বাস এবার আমাকে আরও উন্নয়নমুখী কাজ করার সুযোগ দেবে। এই বীরভূম আমার। আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে জয়ী করবেন। আমি ভোটে জিতে কলকাতায় পালিয়ে যাইনি। বারবার ছুটে এসেছি আপনাদের কাছে। আমার যেটুকু কাজ বাকি আছে, ভোটের পর সে কাজ হয়ে যাবে। আমি সারা বছর আপনাদের পাশে থেকেছি। ভবিষ্যতেও থাকব।’

শতাব্দী রায়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন সিপিএম প্রার্থী রেজাউল করিম। আরও লড়ছেন বীরভূমের বিজেপির এক শক্তিশালী নেতা দুধকুমার মণ্ডল। তিনিই একমাত্র নেতা, যিনি অনুব্রত মণ্ডলকে বেগ দিতে পারেন। তিনি একসময় বিজেপির এই জেলার সভাপতি ছিলেন। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বিরোধ দেখা দিলে তাঁকে সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ফের তাঁকে দলে ফিরিয়ে আনা হয় গত বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে। কংগ্রেসের রয়েছেন ইমাম হোসেন।

দুধকুমার মণ্ডল বলেছেন, বীরভূমে অবাধ নির্বাচন হলে এবার তাঁরাই জিতবেন। কারণ, মানুষ এত দিনে কাজ দেখেছেন। বর্তমান সাংসদ কতটুকু কাজ করেছেন, তা তো এ জেলার মানুষ জানে। মানুষ এবার আরও সচেতন। পরিবর্তন চাইছে। মানুষ এবার বিজেপির দিকে ঝুঁকে পড়েছে। তারা চাইছে, এবার বিজেপি জয়ী হোক।