এক বছর ধরে ফেসবুক, ইউটিউব বন্ধ যে দেশে!

ফেসবুক
ফেসবুক

২০১৮ সালের ২৮ মার্চ। আফ্রিকার দেশ চাদে বন্ধ করে দেওয়া হলো ফেসবুক, ইউটিউবসহ সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। ঠিক এক বছর পর ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে পার হয়ে গেল আরেক ২৮ মার্চ। অথচ দেশটিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সেই যে বন্ধ করা হলো, এখনো খোলার নামগন্ধ নেই! পুরো এক বছর ধরে তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের স্বাদবঞ্চিত হয়ে আছেন বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র এই দেশটির মানুষেরা।

কেন বন্ধ করা হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম?

২০১৬ সালে দেশটিতে সর্বশেষ নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসেন প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস ডেবি। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশজুড়ে তাঁর বিরুদ্ধে সমালোচনা ও বিক্ষোভ তীব্র হতে থাকে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সরকারবিরোধী আন্দোলন খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ছিল দেশটিতে। সরকারের জন্য ইন্টারনেট তখন ছিল বড় এক হুমকির নাম। সাধারণ জনগণের প্রতিবাদের পথ সংকুচিত করে দিতে তাই গত বছরের ২৮ মার্চ ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেয় দেশটির সরকার। যে উদ্দেশ্যে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া, সেটিকে বেশ সফলই বলতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে দেশটিতে প্রকাশ্যে বিক্ষোভের হার কমে গেছে অনেকটাই।

দেশটির এক বিখ্যাত ব্লগার বিবিসির কাছে বলেছেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রবেশাধিকার ছাড়া মনে হচ্ছে যেন কয়েদ ছাড়া কারাগারে আছি।’

সরকার যা বলছে

সাধারণ জনগণ এই অবস্থার জন্য সরকারকে দায়ী করে এলেও কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ সময় ধরে চুপ করে ছিল। অনেক মন্ত্রীই এই ব্যাপারে দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতিও জানিয়েছেন। ইলেকট্রনিক ও ডাক যোগাযোগ বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করেছেন তাঁরা।

গত বুধবার সরকারের মুখপাত্র ওমর ইয়ায়া হিসেইন বিবিসিকে বলেছেন, ‘নিরাপত্তাজনিত কারণে’ এই নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়েছে।

দেশটিতে এখনো বিদ্রোহীরা প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সরকারের বিশ্বাস, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ থাকলে বিদ্রোহীরা তরুণ প্রজন্মকে তাদের দলে টানতে হিমশিম খাবে। এ ছাড়া বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে রেখেছে সরকার, এমনটা বলছে বিবিসি।