ত্রিমুখী লড়াইয়ে অভিনেত্রী লকেট

রত্না দে নাগ, লকেট চট্টোপাধ্যায় ও প্রদীপ সাহা
রত্না দে নাগ, লকেট চট্টোপাধ্যায় ও প্রদীপ সাহা

পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনে তারকা প্রার্থীদের মনোনয়নে এবারও শীর্ষে তৃণমূল কংগ্রেস। ৪২টির মধ্যে পাঁচ আসনে তারকা মনোনয়ন দিয়ে এবারও চমক দেখিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও পাঁচজন তারকাকে মনোনয়ন দিয়েছিল তৃণমূল। এবার সেখান থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে দুই তারকা সন্ধ্যা রায় ও তাপস পালকে। তাঁদের বদলে নিয়ে আসা হয়েছে চিত্রনায়িকা মিমি চক্রবর্তী ও নুসরাত জাহানকে।

ফলে এবার তৃণমূল থেকে লড়ছেন মুনমুন সেন, দেব, শতাব্দী রায়, মিমি চক্রবর্তী ও নুসরাত জাহান।

বিজেপিও এবার তিনজন তারকা প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে। আসানসোলে গায়ক বাবুল সুপ্রিয়, হুগলিতে অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় ও উলবেড়িয়ায় অভিনেতা জয় ব্যানার্জি।

তবে রাজ্যের তৃতীয় শক্তি বামফ্রন্ট বরাবরের মতো এবারও কোনো চলচ্চিত্র তারকাকে মনোনয়ন দেয়নি।

বিজেপির তিন তারকা প্রার্থীর মধ্যে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী হিসেবে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। ভরত নাট্টম, কত্থক ও মণিপুরী নৃত্যে অভিজ্ঞ এই শিল্পী লড়বেন হুগলি থেকে। দানবীর হাজি মুহাম্মদ মুহসীনের স্মৃতিবিজড়িত এবং মমতার ক্ষমতায় আহরণের সিঁড়ি সিঙ্গুর রয়েছে এই হুগলি লোকসভা আসনের মধ্যে। তাই এই আসনটি রাজনীতিবিদদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০০৭ সালে বামফ্রন্ট সরকার হুগলির সিঙ্গুরে টাটাকে ন্যানো গাড়িশিল্প গড়ার জন্য ৯৯৭ একর জমি দিয়েছিল। তার বিরুদ্ধে বিরাট আন্দোলন গড়ে ক্ষমতায় আসেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিদায় নেয় টাটা।

এই আসনে বামফ্রন্টের শরিক সিপিএম প্রার্থী প্রদীপ সাহা। প্রদীপ সাহা বর্তমানে সিপিএম দলেরই একজন বিধায়ক। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও তিনি দাঁড়িয়েছিলেন এই আসনে। হয়েছিলেন দ্বিতীয়। গত লোকসভা নির্বাচনে এই আসনে জিতেছিলেন তৃণমূলের বর্তমান সাংসদ রত্না দে নাগ।

গতকাল শনিবার থেকে সিঙ্গুরের অলিগলিতে প্রচারে নেমেছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। বাইসাইকেল চালিয়ে গ্রামে ঘুরে ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

লকেট বলেন, ‘এবার এলাকার মানুষ আমাকেই ভোট দেবেন। সিঙ্গুরের যে সিঁড়ি বেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতার শীর্ষে উঠেছেন, এখন সেই সিঙ্গুরকে অবজ্ঞা করছেন তিনি। সিঙ্গুরের বহু মানুষ ইন্দিরা যোজনার সস্তার ঘর পায়নি। টাটা থেকে ফেরত পাওয়া সিঙ্গুরের সেই জমি আজও অনুর্বর রয়ে গেছে। ফসল হয় না ঠিকমতো। হুগলিতে জন্মানো আলুর ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না চাষি। সিন্ডিকেট আর চাঁদাবাজির জুলুমে মানুষ আজ ত্রস্ত। এবার তাই হুগলির মানুষ ঝুঁকে পড়েছে বিজেপির দিকে।’

অন্যদিকে, নিজের প্রচারে রত্না দে নাগ বলেন, ১০ বছর ধরে তিনি এই এলাকায় কাজ করছেন। মানুষের সঙ্গে মিশে আছেন। উন্নয়ন করছেন। মানুষ তো তা দেখেছে। তাই হুগলির মানুষ এবারও তাঁকে জয়ী করবে।

রত্না দে নাগের বাবা গোপল দাস নাগও ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস আমলের সরকারের শ্রমমন্ত্রী।

শক্তির দিক থেকে এখানে আরেক প্রার্থী রয়েছেন—সিপিএমের প্রদীপ সাহা। এবারের ত্রিমুখী লড়াইয়ে তিনি জিতে যাবেন বলেই আশা করছেন অনেকে।