ইউক্রেনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কৌতুকাভিনেতার চমক

ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনের সময় সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়ছেন ভলোদিমের জিলেনস্কি। ছবি: রয়টার্স
ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনের সময় সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়ছেন ভলোদিমের জিলেনস্কি। ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম ধাপে এগিয়ে গেছেন প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানো কৌতুকাভিনেতা ভলোদিমের জিলেনস্কি। রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ এই অভিনেতা নির্বাচনী বুথ ফেরত সমীক্ষায় (এক্সিট পোল) সবচেয়ে বেশি ভোট জিতে নিয়েছেন। দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট পিত্রো পরাশেনকা তাঁর চেয়ে প্রায় অর্ধেক ভোট কম পেয়েছেন।

আজ সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত ভোটে ৪১ বছর বয়সী অভিনেতা জিলেনস্কি ৩০ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পেত্রো পরাশেনকা দ্বিতীয় অবস্থানে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন মতাদর্শের ব্যাপারে এই দুজনেরই ব্যাপক সমর্থন রয়েছে। এ মাসের ২১ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত ধাপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এ দুজন।

এক্সিট পোলের ফল প্রকাশের পর এক প্রতিক্রিয়ায় জেলেনস্কি বিবিসিকে বলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত। কিন্তু এটাই চূড়ান্ত কিছু নয়।’
পরাশেনকা তাঁর দ্বিতীয় স্থান পাওয়াকে ‘কঠিন শিক্ষা’ বলে মন্তব্য করেছেন।
দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া তাইমোশেনকা তৃতীয় হয়ে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে ছিটকে পড়েছেন।

ইউক্রেন নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুসারে, এ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে ৩৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তবে কেউ ৫০ শতাংশ ভোট পাননি। শীর্ষ দুজন ২১ এপ্রিলের নির্বাচনে মুখোমুখি হবেন। ইউক্রেনজুড়ে অনুষ্ঠিত এই এক্সিট পোলে ভোট পড়েছে ৬৩ দশমিক ৫২ শতাংশ। এর মধ্যে ভলোদিমের জেলেনস্কি ৩০ দশমিক ০৮, পিত্রো পরাশেনকা ১৬ দশমিক ৬৫, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া তাইমোশেনকো ১৩ দশমিক ৩৮, ইউরি বয়কা ১১ দশমিক ৪০, আনাতোলি হ্রিশেনকা ৬ দশমিক ৯২, ইকহোর মিশকো ৫ দশমিক ৮২, আলে লিয়াশকো ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।

ইউক্রেনে নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতিতে প্রেসিডেন্টের প্রভূত ক্ষমতা রয়েছে।

এই ভোটে শীর্ষ স্থান পাওয়া জেলেনস্কিকে নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর অভিনীত একটি চরিত্র যেন বাস্তব রূপ পেতে যাচ্ছে। দেশটিতে প্রচারিত ব্যঙ্গাত্মক টিভি শো ‘সার্ভেন্ট অব দ্য পিপল’–এ তাঁর ভূমিকা ছিল একজন সাধারণ ব্যক্তির, যিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশটির প্রেসিডেন্ট হন। তাঁর সেই চরিত্রই যেন বাস্তবে এসে ধরা দিতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে জন্য ব্যাপকভাবে কোনো প্রচারে অংশ নিতে দেখা যায়নি জেলেনস্কিকে। কোনো সমাবেশ করেননি। অল্প কিছু সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তাঁর শক্ত কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শ নেই। শুধু নতুন ও ভিন্ন কিছু করার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে নেমেছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অত্যন্ত সক্রিয় জেলেনস্কি তরুণ ভোটারদের টানতে চাইছেন। তাঁর আরেকটি সুবিধা হচ্ছে, তিনি রুশ ও ইউক্রেনীয় দুটো ভাষাতেই কথা বলতে পারেন। ইউক্রেনে ভাষা ইস্যুটিকে খুব সংবেদনশীল হিসেবে দেখা হয়। ইউক্রেনের পূর্ব দিকের রুশ ভাষায় কথা বলা লোকজনের ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছেন তিনি।