রাজধানীতেই হার এরদোয়ানের!
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় মেয়র নির্বাচনে হেরে গেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের দল এ কে পার্টি। এ ছাড়া আরেক বড় শহর ইস্তাম্বুলেও পিছিয়ে আছে তাঁর দল। ফলে বড় ধরনের বিপত্তির মুখে পড়েছেন তিনি।
২০০১ সালে দল গঠনের পর এই প্রথম আঙ্কারার নিয়ন্ত্রণ হারাল এ কে পার্টি। গতকাল রোববার এসব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রায় ১৬ বছর ধরে তুরস্কে ক্ষমতায় আছেন এরদোয়ান। তখন থেকে দেশটির রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছেন এবং কঠোরভাবে দেশ শাসন করছেন তিনি। দুই মাস আগে এই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়। এই স্থানীয় নির্বাচনকে তুরস্কের টিকে থাকার নির্বাচন হিসেবে অভিহিত করেছিলেন তিনি। তাঁর প্রতিদিনের নির্বাচনী সমাবেশ এবং অতিমাত্রায় মিডিয়া কাভারেজ ভোটারদের মন জয় করতে ব্যর্থ হয়েছে এই দুই শহরে। অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব এই ভোটের ওপর পড়েছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এ নির্বাচনকে এরদোয়ানের শাসনের রায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তুরস্কের টেলিভিশনগুলো বলছে, বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) প্রার্থী মানসুর ইয়াভাস আঙ্কারায় জিতেছেন। এ ছাড়া ইস্তাম্বুলে ২৮ হাজার ভোটে এগিয়ে আছে সিএইচপি।
সিএএইচপি নেতা কামাল কুলুসদারোলু বলেন, মানুষ গণতন্ত্রের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তাঁরা গণতন্ত্র বেছে নিয়েছেন।
এই নির্বাচনে ভোটও পড়েছে বেশি। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলুর খবরে বলা হয়েছে, ৮৪ দশমিক ৫২ শতাংশ ভোট পড়েছে।
প্রাথমিক ফলাফলে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ইস্তাম্বুলেও এগিয়ে আছে বিরোধীরা। তবে সেখানে এখনো ১ শতাংশ ব্যালট বাক্স খোলা হয়নি, যাকে জয় চুরির কৌশল হিসেবে বিবেচনা করছে বিরোধী।
কিন্তু ক্ষমতাসীন একেপি আঙ্কারার ফলকে চ্যালেঞ্জ করেছে। তাদের দাবি, আঙ্কারার ১২ হাজার ১৫৮ কেন্দ্রের অধিকাংশতেই ভোটের ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে। দলটির সাধারণ সম্পাদক ফাতি শাহিন এক টুইটে বলেন, জনগণের ইচ্ছাকে বিকৃত করা তারা সইবে না। এ বিষয়ে তাঁরা আইনি অধিকারের পূর্ণ প্রয়োগ করবেন।
তুরস্কের সাংবাদিক রুসেন চাকের বলেন, এ নির্বাচন ১৯৯৪ সালের নির্বাচনের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৯৪ সালের পৌর নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন।
তবে দেশজুড়ে এরদোয়ান ও তাঁর মিত্রদল এগিয়ে আছে। তারা এ নির্বচনে ভোট পেয়েছে ৫১ শতাংশ এবং তাদের বিরোধীরা পেয়েছে ৩৭ শতাংশ ভোট। তথ্যসূত্র: বিবিসি ও সিএনএন