সমাজতন্ত্রের ব্যর্থতা নিয়ে সতর্কতা সি'র

সি চিন পিং
সি চিন পিং

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, চীনের ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত ও সামরিক প্রভাব রয়েছে। তাই কমিউনিস্ট পার্টিকে উপলদ্ধি করতে হবে, সমাজতন্ত্রের ব্যর্থতাগুলোর সমালোচনা করতে পশ্চিমাদের শক্তিশালী দিকগুলো ব্যবহার করতে পারে কিছু লোক। ২০১৩ সালে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর দেওয়া ভাষণে সমাজতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করতে এমন কথাই বলেছিলেন তিনি। সোমবার সির ওই ভাষণ কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম সারির তাত্ত্বিক সাময়িকী কুইশিতে প্রকাশিত হয়েছে।

ছয় বছর আগে চীনের ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর দীর্ঘ বক্তব্য রেখেছিলেন সি চিন পিং। ওই সময় তিনি দলের প্রতি পুরোপুরি আনুগত্য ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। পাশাপাশি কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের দুর্নীতির লাগাম টানতে ব্যাপকভিত্তিতে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন। তিন দশক আগে চীনের তিয়েনআনমেন স্কয়ারে গণতন্ত্রপন্থীদের ওপর রক্তক্ষয়ী অভিযানসহ একাধিক সংবেদনশীল ঘটনার বার্ষিকী সামনে। এর আগেই সির পুরোনো বক্তব্যই জনগণের সামনে তুলে আনা হলো। ধারণা করা হচ্ছে, দলের প্রতি আনুগত্য আরও বাড়াতে এ বছরটি বেছে নেওয়া হয়েছে।

ক্ষমতায় আসার পর সির প্রথম ভাষণ ছিল সাড়া জাগানো। সেই ভাষণে সমাজতন্ত্রের পুরোধা কার্ল মার্ক্স, ফ্রেডরিক এঙ্গেলের উদ্ধৃতি তুলে ধরেন তিনি। সি বলেন, পুঁজিবাদকে উপর্যুপুরি নিশ্চিহ্ন করবে সমাজতন্ত্র। তবে এটা ঘটবে দীর্ঘদিনের ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে। আর চীনের জনগণের আদর্শের সঙ্গে মিল রেখেই চীন সমাজতন্ত্রের চর্চাই করে।

চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘অর্থনৈতিক, প্রযুক্তি ও সামরিক খাতে থাকা পশ্চিমা দেশগুলোর দীর্ঘদিনের প্রভাবের বস্তুগত বাস্তবতা পুরোপুরিভাবে মূল্যায়ন করতে হবে চীনকে। দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা এবং দুই সমাজব্যবস্থার (পুঁজিবাদী ও সমাজতন্ত্র) সব দিক সতর্কতার সঙ্গে বিশ্লষণ করতে হবে। দলকে বাস্তবতা বোঝা প্রয়োজন যে কিছু লোক আমাদের দেশের সামজিক উন্নয়নের অপ্রতুলতার সঙ্গে পশ্চিমা উন্নত দেশগুলোর ভালো অবস্থার তুলনা করে এবং তাঁরা বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করতে চান।’

সমাজতন্ত্রই সেরা সমাজব্যবস্থা, সেটা বক্তব্যে তুলে ধরতে ভুল করেননি সি। বিভিন্ন দেশে পুঁজিবাদী ও সমাজতন্ত্রের সফলতা ও ব্যর্থতা দিক তুলে ধরে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ইতিহাস ও বাস্তবতা আমাদের শিক্ষা দিয়েছে যে শুধু সমাজতন্ত্রই চীনকে রক্ষা করতে পারে। চীনের জনগণ সমাজতন্ত্রের আদর্শ ধারণ করেই চীনকে এগিয়ে নিতে পারে। এটাই ইতিহাসের সারমর্ম ও জনগণের পছন্দ।’