নেতানিয়াহু-মোদি নৈতিকভাবে দেউলিয়া: ইমরান

ইমরান খানের টুইট বার্তা
ইমরান খানের টুইট বার্তা

ভোটে জিততে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ভূমি দখল করছেন বলে অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আজ মঙ্গলবার এক টুইটবার্তায় তিনি প্রশ্ন রেখে এই মন্তব্য করেন।

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি ও কাশ্মীরের ব্যাপারে টেনে ইমরান খান প্রশ্ন তোলেন, তাহলে কি সাম্প্রতিক সময়ে এই দুটি স্থানে দখল ও যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয় ভোটে জেতার জন্য? ইমরান খান বিষয়টিকে বেনিয়ামিন ও মোদির ‘নৈতিক দেউলিয়াত্ব’ বলে অবিহিত করেন।

ইমরান খান এমন সময় এই মন্তব্য করলেন, যখন ভারত ও ইসরায়েলে সরকার গঠনের নির্বাচনী মৌসুম। আজ চলছে ইসরায়েলের জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনের মধ্য বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পঞ্চমবারর মতো দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হওয়ার চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে, আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। মোট সাত দফায় অনুষ্ঠিত এই নির্বাচন শেষ হবে আগামী ১৯ মে। বিজেপি না কংগ্রেস—ফলাফল মিলবে ২৩ মে।

ইমরান খান তাঁর মন্তব্যে বলেন, নেতানিয়াহু ও মোদি নৈতিকভাবে এতটাই দেউলিয়া হয়েছেন যে তাঁরা ভোটে জিততে অবৈধ দখলদারি করছেন। ইমরান খান বলেন, ভারত কাশ্মীরে আর ইসরায়েল পশ্চিম তীরে যে দখলদারি চালাচ্ছে, তা একাধারে আন্তর্জাতিক আইন ও দেশ দুটির নিজ নিজ সংবিধানবিরোধীও।

ইমরান খান। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ইমরান খান। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

ইমরান খানের এই টুইটবার্তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে পাকিস্তানের ডন অনলাইন। এতে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গোলান উপত্যকা ও ভারত-পাকিস্তানের ঘটনাকে সংযুক্ত করা হয়।

গত ২৫ মার্চ গোলান উপত্যকায় ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি দিয়ে ঘোষণাপত্রে সই করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প । হোয়াইট হাউসে করা ওই প্রেসিডেনশিয়াল ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরের সময় ট্রাম্পের পাশে উপস্থিত ছিলেন নেতানিয়াহু। তখন থেকেই ট্রাম্পের সঙ্গে এই সখ্যকে নেতানিয়াহুর নির্বাচনী বৈতরণি পার হওয়ার কৌশল হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। টুইটবার্তায় ইমরান খান এই বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করেন।

এ ছাড়া ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক উত্তেজনার বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করেন ইমরান খান। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় বোমা হামলায় আধা সামরিক বাহিনীর অন্তত ৪০ সদস্য নিহত হন । এর জবাবে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারত পাকিস্তানের বালাকোটে জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলার দাবি করে । মোদি সরকার দাবি করে আসছিল, ওই হামলায় পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জয়শ–ই–মোহাম্মদের অন্তত ৩০০ সদস্য নিহত হয়েছেন। কিন্তু এই দাবির পক্ষে ভারত কোনো প্রমাণ দিতে সক্ষম হয়নি। উল্টো অস্ট্রেলিয়াসহ পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ বলে আসছে, বালাকোটে হামলায় কিছু পাইনগাছ ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা ঘটেনি। রাজনীতি বিশ্লেষকেরা বালাকোট নিয়ে উচ্চকণ্ঠী মোদির দাবিকে দেখছেন নির্বাচনে জেতার কৌশল হিসেবে। তাঁদের যুক্তি, কারগিল যুদ্ধকে কেন্দ্র করে সেই সৌভাগ্য হয়েছিল অটল বিহারি বাজপেয়ির বেলায়। তাই ইমরান টুইটবার্তায় মোদিকেও খোঁচা দিতে ভুলে যাননি।