শর্ত সাপেক্ষে ব্রেক্সিটে সময় বাড়াতে পারে ইইউ!

বার্লিনে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ছবি: সংগৃহীত
বার্লিনে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ছবি: সংগৃহীত

ইউরোপীয় ইউনিয়ন জোট থেকে যুক্তরাজ্যের চলে যাওয়ার সময়সীমা বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে সে ক্ষেত্রে কিছু শর্ত যুক্ত হবে। আজ বুধবার রাতে ব্রাসেলসে ইইউ রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানেরা সময়সীমা বৃদ্ধির বিষয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তবে সময় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে শর্ত হতে পারে, আগামী ২৩-২৬ মে অনুষ্ঠেয় ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনে যুক্তরাজ্যের অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা।

ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে আইনগতভাবে ইইউ জোটের সদস্য দেশ হিসেবে বহাল থাকবে যুক্তরাজ্য। পাশাপাশি ইইউ জোট থেকে চূড়ান্ত বিচ্ছেদ সংঘটিত না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাজ্যকে জোটের সঙ্গে গঠনমূলক ও দায়িত্বশীলতার সব প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে হবে। তবে এসব শর্তে যুক্তরাজ্যের আপত্তি থাকলে আগামী ১ জুন থেকে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট–প্রক্রিয়া আপনা–আপনি সম্পন্ন হয়ে যাবে। যুক্তরাজ্য ছাড়া ইইউ জোটভুক্ত অন্য সদস্য দেশগুলো ব্রেক্সিট প্রশ্নে আবার কোনো নতুন আলোচনা করার বিষয়ে অনাগ্রহী।

বুধবার ব্রাসেলসে ইইউ রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের শীর্ষ সম্মেলনে সময়সীমা বৃদ্ধির বিষয়ে কোনো সমঝোতা না হলে, গত চার সপ্তাহ আগে ২৯ মার্চ থেকে মেয়াদ বাড়িয়ে ১২ এপ্রিল করা হয়েছিল। পরে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ৩০ জুন পর্যন্ত বর্ধিত সময় চান। তবে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মে আবার জানিয়েছেন ৩০ জুনের মধ্যেও ব্রেক্সিট–বিষয়ক চুক্তি সম্পাদন সম্ভব নয়।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী মে এই ঘোষণা দেওয়ার পরপরই ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক ব্রেক্সিটের জন্য যুক্তরাজ্যকে ‘১২ মাসের নমনীয়’ সময় বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন, যা ২০১৯ সালের শেষের দিকে বা ২০২০ সালের মাঝামাঝি শেষ হবে।

প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বুধবার ব্রাসেলসে ইইউ জোটের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের আগেই গতকাল মঙ্গলবার ১২ মাসের নমনীয় সময় বদ্ধির বিষয়টি নিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ও জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সম্মতি আদায়ের জন্য প্যারিস ও বার্লিন সফর করেছেন।

প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল উভয় রাষ্ট্রপ্রধান ১২ মাসের নমনীয় সময় বৃদ্ধির বিষয়টিতে তাঁদের সম্মতির কথা জানিয়েছেন। চুক্তিহীন ব্রেক্সিট হলে উভয় পক্ষেই বাণিজ্য ও সীমান্ত বন্দরে নানা রকম জটিল পরিস্থিতির উদ্ভব হবে বলে জোট সদস্যরা ও যুক্তরাজ্য মনে করছে। এসব বিষয় চিন্তা করেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক বাস্তবসম্মত বিচ্ছেদের জন্য ১২ মাসের নমনীয় সময় বৃদ্ধির প্রস্তাবটি সামনে এনেছেন। তবে এই সময়সীমা বৃদ্ধির বিষয়টি নির্ভর করছে আজ বুধবার সন্ধ্যায় ব্রাসেলসে ২৭ সদস্যবিশিষ্ট ইইউ জোট এবং যুক্তরাজ্যের মধ্য আলোচনার ফলাফলের ওপর।