সুদানে সামরিক প্রধানের পদত্যাগ

সুদানে কারফিউ ভেঙে জনগণ রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ শুরু করেছে। ছবি: রয়টার্স।
সুদানে কারফিউ ভেঙে জনগণ রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ শুরু করেছে। ছবি: রয়টার্স।

প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে গত বৃহস্পতিবার ক্ষমতাচ্যুত করার পর দেশ পরিচালনার জন্য গঠন করা সামরিক কাউন্সিলের প্রধান হিসেবে এক দিন পদে থাকার পর গতকাল শুক্রবার আকস্মিক পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আওয়াদ ইবনে আউফ। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সুদানে কারফিউ ভেঙে জনগণ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করার পর তিনি এ ঘোষণা দেন।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, বশিরের বিদায়ে সামরিক শাসন নয়, বেসামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হোক।

নতুন বেসামরিক সরকারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনরোষ প্রশমনের চেষ্টার অংশ হিসেবে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে আওয়াদ ইবনে আউফ কাউন্সিলপ্রধানের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন। তাঁর পদ সামলাবেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহা আল-বুরহান। আওয়াদ ইবনে আউফ বলছেন, শুধু তিনি নন, চিফ অব স্টাফ পদে থাকা কামাল আবদেল মারুফ আল-মাহিকে কাউন্সিলের ডেপুটি প্রধান থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

আউফ বলেন, তাঁরা পরিবর্তন সূচনা করতে যাচ্ছেন।

পরিবর্তনের খবর আসার মাত্রই খার্তুমের রাস্তায় আনন্দ–উল্লাস শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা।

বিক্ষোভকারীদের অন্যতম গ্রুপ সুদানিজ প্রফেশনালস অ্যাসোসিয়েশনের (এসপিএ) মুখপাত্র রশিদ সাইদ বলেন, ‘যা ঘটেছে, তা সঠিক পথে যাওয়ার একটি ধাপ এবং জনগণের চাওয়ার প্রতিফলন ঘটেছে। আমরা জয়ের খুব কাছাকাছি রয়েছি। আমরা আমাদের দাবির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সাধারণ জনগণকে রাজপথ না ছাড়ার আহ্বান জানান তিনি।

প্রেসিডেন্ট বশিরকে বৃহস্পতিবার ক্ষমতাচ্যুত করার পর দেশ পরিচালনার জন্য গঠন করা সামরিক কাউন্সিল এর আগে ঘোষণা দিয়েছিল, তারা দুই বছর ক্ষমতায় থাকবে। ওই কাউন্সিলের রাজনৈতিক কমিটির প্রধান ওমর জাইন আল-আবিদিন বলেন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সংলাপ করবেন তাঁরা।

এর আগে সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে বৃহস্পতিবার ক্ষমতাচ্যুত করার আগেই রাস্তায় নেমে আসে বিক্ষোভকারীরা। ওই সময় রাজধানী খার্তুমের বিভিন্ন সড়ক, সেতু ও বিভিন্ন স্থানপনায় সেনা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। তখন বিক্ষোভকারীরা বশিরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিল। পরে বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার ঘোষণা দেওয়ার পর কারফিউ জারি করা হয়।

কিন্তু রাতে কারফিউ ভেঙে রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। তারা দাবি জানায়, বশিরের বিদায়ে সামরিক শাসন নয়, দ্রুত বেসামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হোক।

এই বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওমর জাইন আল-আবদিন বলেন, ‘আমাদের মৌলিক লক্ষ্য দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং নিরাপত্তা বজায় রাখা।’

প্রেসিডেন্ট বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর দেশ পরিচালনার জন্য যে সামরিক কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে, তার প্রধান আল-আবদিন। তিনি বলেন, ‘দেশের কোনো স্থানে নিরাপত্তার লঙ্ঘন আমরা মেনে নেব না।’ তবে তিনি এ-ও বলেছেন, ওই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংলাপের পরিকল্পনা চলছে।