নির্বাচনবিধি লঙ্ঘনের দায়ে যোগী আদিত্যনাথ ও মায়াবতীর ওপর নিষেধাজ্ঞা

যোগী আদিত্যনাথ (বাঁয়ে) ও মায়াবতী
যোগী আদিত্যনাথ (বাঁয়ে) ও মায়াবতী

ভারতের উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী দুজনের ওপরই নির্বাচনী প্রচার চালানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ভারতের নির্বাচন কমিশন আজ সোমবার নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে এ নিষেধাজ্ঞা দেয়।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়, সোমবার সাম্প্রদায়িক বক্তব্যের কারণে যোগী আদিত্যনাথের ওপর তিন দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয় কমিশন। আর মায়াবতীর ওপর আরোপ করা হয়েছে দু দিনের নিষেধাজ্ঞা। তাঁর বিরুদ্ধে দেওবন্দে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কমিশন এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারতের সংবিধানের ৩২৪ নম্বর অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে। এর আগে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতাদের প্রতি নমনীয় আচরণ করার অভিযোগ তুলেছিল বিরোধী পক্ষগুলো।

এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনে ঘৃণাপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ার কারণে বিজেপি প্রধান অমিত শাহ ও সমাজবাদী দলের নেতা আজম খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কমিশন এবারও একই কারণে যোগী আদিত্যনাথ ও মায়াবতীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল। তবে এরপরও হয়তো কমিশনের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর পক্ষপাতের অভিযোগ থেকেই যাবে। কারণ আজই দেশটির সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে কমিশন পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন। এর দু ঘণ্টা পরই কমিশনের পক্ষ থেকে এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসে। এর আগে অবশ্য এই দুই নেতাকে সতর্ক করেছিল কমিশন।
ভারতের নির্বাচনী আচরণবিধিতে প্রচারের সময় কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দেওয়ায় স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি দেওবন্দে দেওয়া বক্তব্যে বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) নেতা মায়াবতী মুসলিম সম্প্রদায়কে কংগ্রেস ও তাঁর জোটের মধ্যে ভোট ভাগাভাগি না করার বিষয়ে সতর্ক করেন। এর কয়েক দিন পর মায়াবতীকে একহাত নিতে যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ও বিএসপি আলীতে আস্থা রাখেন, তবে আমাদেরও বজরংবলীর ওপর বিশ্বাস রয়েছে।’

যোগী আদিত্যনাথের এ বক্তব্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সুস্পষ্ট এ সাম্প্রদায়িক বক্তব্যের কারণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিরোধী নেতারা। এ অবস্থায় বিরোধী দলগুলো আদালতের শরণাপন্ন হয়। আজ সুপ্রিম কোর্টে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি বলেন, ‘আমাদের কোনো ক্ষমতা নেই। প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে আমরা বিরত করতে পারি না।’
এই বক্তব্যের পর ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈই বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বলছে, “আমরা নখদন্তহীন”। আচরণবিধি ভাঙলে তারা একটি নোটিশ দেয়, তা না মানলে একটি সতর্কবার্তা। আসলেই বিষয়টি এমন কিনা, তা জানতে চাই আমরা। আমরা এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের এমন একজন প্রতিনিধির কাছ থেকে শুনতে চাই, যার এ বিষয়ে গভীর জ্ঞান রয়েছে।’