বিহুর সঙ্গে চলছে চেইরাওবা, সাংকিনও
বৈশাখ বন্দনায় উৎসবের কোনো ঘাটতি নেই উত্তর–পূর্ব ভারতে। বিহু বা পয়লা বৈশাখের মতো পরিচিত উৎসবের পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অল্প পরিচিত বা অপরিচিত উৎসব। সেগুলোও অত্যন্ত জমকালো ও বর্ণময়।
আসামেরই বোড়ো জাতিগোষ্ঠীর মানুষ এই বিহুর সময়েই উদ্যাপন করেন বৈশাগু উৎসব। তিন দিন ধরে চলে নাচগান ও খানাপিনা। বোড়ো জাতিগোষ্ঠীর মানুষ এবারও মেতে উঠেছেন উৎসবে।
উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুরে চলছে চেইরাওবা। অনুষ্ঠানটি মূলত আধ্যাত্মিক। ঈশ্বরের উদ্দেশে ফলফলাদি অর্পণের পাশাপাশি চলে গানবাজনাও। সবই নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে।
আসামের পাশের রাজ্য অরুণাচল প্রদেশে আবার এই সময় সবাই মেতে ওঠেন পানি উৎসবে। একে অন্যের গায়ে পানি ছিটিয়ে আনন্দ উপভোগ করে বৈশাখকে স্বাগত জানান তাঁরা। অরুণাচলের এই উৎসবের নাম সাংকিন।
বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের এই অনুষ্ঠান গোটা অরুণাচলেই বেশ বড় আকারে হয়। অরুণাচলের সিংপো, তাই আইতন, তাই তুরাং প্রভৃতি সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে এই সাংকিনই হচ্ছে সবচেয়ে বড় উৎসব।
অরুণাচলের রাজ্যপাল বি ডি মিশ্র বলেন, ‘এই উৎসব পবিত্রতার উৎসব। স্বচ্ছতার প্রতীক।’ রাজ্যপাল মিশ্র রাজ্যবাসীকে এই উৎসবকে শান্তি ও সম্প্রীতির উৎসব হিসেবে উদ্যাপন করার অনুরোধ জানান।
আসামে তো চলছেই বিহু নিয়ে হরেক উন্মাদনা, রাজ্যের বরপেটা জেলায় এবারও আয়োজন করা হয় গরুর ফ্যাশন শো। বরপেটার গোবিন্দপুরের বাজালিতে উৎসাহ ও উন্মাদনায় উদ্যাপিত হয় ‘কাউ প্যারেড’। বিভিন্ন জায়গা থেকে গরু নিয়ে আসা হয়। তারপর তাদের তেল-হলুদ মাখিয়ে স্নান করানো হয়। পরানো হয় অসমিয়া গামছা ও ফুলের মালা। তারপর চলে গরুদের সুন্দরী প্রতিযোগিতা।
আসামের সাংস্কৃতিক সংস্থা ব্যতিক্রমের অন্যতম কর্মকর্তা বিধান দাশগুপ্তের মতে, আসলে এখানকার মানুষ তাঁদের নিজেদের ঐতিহ্যকে আগলে রাখতে চান। তাই এখানকার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয় এই উৎসবে।
বাঙালিরাও নববর্ষে মেতে উঠেছেন। চলছে বিহু ও নববর্ষের অনুষ্ঠান একযোগে। নির্বাচনী উত্তাপেও ছেদ নেই উৎসবের আয়োজনে।