গ্রেপ্তার এড়াতে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করলেন পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট

পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট অ্যালান গার্সিয়া। ছবি: রয়টার্স
পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট অ্যালান গার্সিয়া। ছবি: রয়টার্স

তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল মোটা অঙ্কের ঘুষ নেওয়ার। আর এ জন্য পুলিশ এসেছিল তাঁকে গ্রেপ্তার করতে। তিনি ওই গ্রেপ্তার এড়াতে নিজের মাথায় গুলি করে বসেন। আর এতেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনাটি ঘটিয়েছেন পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট অ্যালান গার্সিয়া।

মাথায় গুলি করার পরে গার্সিয়াকে পেরুর রাজধানী লিমার একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে মারা যান তিনি। দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট মার্তিন বিজকাররা গার্সিয়ার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

বিবিসির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কার্লোস মোরান জানিয়েছেন, ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ গার্সিয়ার বাড়ি যায়। এ সময় গার্সিয়া একটা ফোন করবেন বলে এক মিনিট অপেক্ষা করতে বলেন পুলিস সদস্যদের। এরপর তিনি পাশের কক্ষে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পরে ওই কক্ষ থেকে গুলির শব্দ এলে পুলিশ সদস্যারা দৌড়ে সেখানে যান। সেখানে তারা গার্সিয়াকে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একটি চেয়ারে বসে থাকতে দেখেন। ওই পুলিশ সদস্যারা তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করেন।

গার্সিয়া পেরুতে দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ সালে প্রথম মেয়াদ শেষে তিনি আবারও ২০০৬ সালে ক্ষমতায় আসেন এবং ২০১১ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা বলছে, দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালীন রাজধানী লিমায় মেট্রো লাইন নির্মাণে ওদেব্রেশ কোম্পানির কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছিলেন গার্সিয়া। ওই ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে পুলিশ তাঁকে আটক করতে গিয়েছিল।

তবে গার্সিয়া ঘুষের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার।

অন্যদিকে, ওদেব্রেশ কোম্পানি ২০০৪ সালের থেকে বিভিন্ন ব্যক্তিকে প্রায় ৩০ মিলিয়ন ডলার ঘুষ দিয়েছে বলে স্বীকার করেছে। পেরুর তদন্ত সংস্থা বলছে, ওদেব্রেশ বড় বড় নির্মাণকাজের টেন্ডার পেতে সরকারি কর্মকর্তা ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মোটা অঙ্কের ঘুষ দিত।

বিবিসি ওই খবরে আরও জানিয়েছে, পেরুর সাম্প্রতিক পাঁচ প্রেসিডেন্ট দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত। এর মধ্যে আলবার্তো ফুজিমোরি দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কারাগারে রয়েছেন।

অন্যদিকে, সাবেক নেতা পেদ্রো পবালো কুসিন্সকি ওই একই ওদেব্রেশ কেলেঙ্কারিতে গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হন। আজ বুধবার উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। একই সঙ্গে দেশটির বর্তমান বিরোধী দলের নেতা কেইকে ফুকিমুরিকে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য আটক রাখা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ওদেব্রেশের কাছ থেকে তিনি ১২ লাখ ডলার ঘুষ নিয়েছেন।