লিবিয়ায় সংঘর্ষ চলছেই

লিবিয়ার ত্রিপোলির আল-সুয়ানি এলাকায় পূর্ব বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের পর প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারি বাহিনীর সদস্যরা। ছবি: রয়টার্স
লিবিয়ার ত্রিপোলির আল-সুয়ানি এলাকায় পূর্ব বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের পর প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারি বাহিনীর সদস্যরা। ছবি: রয়টার্স

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির শহরতলিতে গতকাল বৃহস্পতিবার আবার মর্টার ও বোমাবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। অল্পের জন্য হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছে স্থানীয় একটি ক্লিনিক। আন্তর্জাতিক স্বীকৃত লিবীয় সরকারের সঙ্গে পূর্ব বাহিনীর সংঘর্ষের কারণে দুই সপ্তাহ ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সেখানকার লোকজন।

আজ শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার নিয়ন্ত্রিত ত্রিপোলির কিছু অংশে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ত্রিপোলির ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় রকেট হামলায় সাতজন নিহত হওয়ার ঘটনার এক দিন পর এই বোমাবর্ষণের ঘটনা ঘটল। ঘনবসতিপূর্ণ ওই এলাকা পূর্বাঞ্চল বাহিনী দ্য লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মির (এলএনএ) প্রধান খলিফা হাফতার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শহরতলি আল-সুয়ানিতে রয়টার্সের প্রতিবেদকেরা দেখেছেন, স্থানীয় একটি ক্লিনিক অল্পের জন্য বোমাবর্ষণ থেকে রক্ষা পেয়েছে।

স্থানীয় লোকজন বোমাবর্ষণের ঘটনায় হাফতার বাহিনীকে দোষারোপ করেছে। তাদের মতে, রাজধানীর দক্ষিণে হাফতার বাহিনীর অবস্থান থেকে বোমাবর্ষণ হচ্ছিল। আল-সুয়ানি থেকে স্থানচ্যুত ইউসেফ সালেম নামের এক ব্যক্তি জানান, ‘আমরা জাতিসংঘ ও নিরাপত্তা পরিষদকে বলছি, বোমার শব্দ শুনুন...আমাদের ওপর রকেট হামলা হচ্ছে। দয়া করে আমাদের জন্য একটি সমাধান খুঁজুন।’

এলএনএ দাবি করেছে, তারা আবাসিক এলাকায় বোমা হামলা চালায়নি।
বুধবারের হামলায় সাতজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ত্রিপোলি সরকার হাফতারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

অন্যদিকে ইতিমধ্যে পূর্ব বাহিনী লিবিয়া সরকারের প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ আল-সেরাজসহ পশ্চিম বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

এসব ঘটনায় দেশটিতে রাজনৈতিক সমাধানের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এমনকি অস্ত্রবিরতিরও কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। ২০১১ সালে লিবিয়ার বহু বছরের স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করে হত্যার পর থেকেই দেশটিতে ক্ষমতার দখল নিয়ে অরাজকতা ও যুদ্ধাবস্থা চলছে। বিদেশি শক্তিগুলো সাম্প্রতিক যুদ্ধাবস্থা বিস্তারে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও তা ঠেকাতে ঐক্যফ্রন্ট গড়ে তুলতে পারছে না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুসারে, সরকার ও পূর্ব বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত ২০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ জন বেসামরিক নাগরিক। আহত হয়েছে ৯১৩ জন।