শ্রীলঙ্কা যা বলছে নিউজিল্যান্ড তা বলছে না

ক্রাইস্টচার্চে হামলার পর গত ২৮ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন। ছবি: রয়টার্স
ক্রাইস্টচার্চে হামলার পর গত ২৮ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন। ছবি: রয়টার্স

ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলার প্রতিশোধ নিতে শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডেতে হামলা চালানো হয়েছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে, এর সপক্ষে নিউজিল্যান্ডের কাছে কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন নিজেই এ কথা বলেছেন। শ্রীলঙ্কা দাবি করেছে, গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে হামলার ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে শ্রীলঙ্কায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে হামলা চালানো হয়। ক্রাইস্টচার্চের হামলায় ৫০ জন নিহত হন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার দাবির বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো সরকারি বা গোয়েন্দা তথ্য নেই। ঘটনার তদন্তের একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে শ্রীলঙ্কা। কাজেই এখন আমরা একটুখানি পিছিয়ে থাকছি। তদন্ত যা করার তারা করুক। তবে যা বলা হচ্ছে, তা নিয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্যই নেই।’

গত রোববার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো ও এর আশপাশের তিনটি গির্জা, তিনটি পাঁচ তারকা হোটেলসহ মোট আট জায়গায় হামলা চালানো হয়। এতে নিহত হয়েছেন ৩২১ জন। আহত পাঁচ শতাধিক। খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের উৎসব ইস্টার সানডে অনুষ্ঠানকে লক্ষ্য করে চালানো হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বাংলাদেশসহ অন্তত আটটি দেশের নাগরিক রয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুয়ান বিজেবর্ধন দেশটির পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে দাবি করেছেন, নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হওয়া হামলার প্রতিশোধ নিতে শ্রীলঙ্কায় হামলা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে তিনি এ মন্তব্য করেছেন বললেও এর সপক্ষে কোনো উদ্ধৃতি বা সাক্ষ্য উপস্থাপন করেননি।

শ্রীলঙ্কার সরকার স্বীকার করেছে, এ হামলার ১০ দিন আগেই তারা একটি বিদেশি গোয়েন্দা বাহিনী থেকে সতর্কবার্তা পেয়েছিল। ওই বিদেশি গোয়েন্দা বাহিনী জানিয়েছিল, ন্যাশনাল তৌহিদি জামায়াত দেশটির বিভিন্ন গির্জা লক্ষ্য করে হামলা চালাতে পারে। সতর্কবার্তা পাওয়ার পরও হামলা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে না পারাকে শ্রীলঙ্কার গোয়েন্দা বাহিনীর বিশাল ব্যর্থতা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

গতকাল এ হামলার দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। এর সপক্ষে কোনো প্রমাণ দেয়নি সংগঠনটি। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, হামলাকারীদের শনাক্ত করার ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই হামলার সঙ্গে আইএসের সম্পৃক্ততা রয়েছে।