রাশিয়ার গুপ্তচর তিমি আটক!

আটক হওয়া বিলুগা তিমি
আটক হওয়া বিলুগা তিমি

বিশ্বে সামরিক প্রভাব বাড়াতে শক্তিধর দেশগুলো গুপ্তচর নিয়োগ করে থাকে। শত্রুপক্ষের তথ্য হাতিয়ে নিয়ে গুপ্তচরেরা তা তুলে দেন নিজ গোয়েন্দা সংস্থার হাতে। এক দেশের গুপ্তচরকে তাই আরেক দেশের সার্বভৌম অঞ্চলে পেলে তার গ্রেপ্তার ও শাস্তি নিশ্চিত। তবে এবার জানা গেছে এক তিমি গুপ্তচরের কথা। গত শুক্রবার নরওয়ের উপকূলে আটক হয়েছে এটি। ধারণা করা হচ্ছে, রাশিয়ার নৌবাহিনীর প্রশিক্ষিত তিমিটি উত্তর মহাসাগরে গুপ্তচরবৃত্তির কাজে নিয়োজিত ছিল।

যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-সিক্সের গুপ্তচর জেমস বন্ডের মতো দুর্ধর্ষ না হলেও এই তিমি বেশ চিন্তার ভাঁজই ফেলেছে নরওয়ের কপালে। উত্তর মহাসাগর এলাকায় বরেন্টস সাগরের জলসীমা নিয়ে একসময় রাশিয়া ও নরওয়ের মধ্যে বিরোধ ছিল।

গুপ্তচর তিমিটি বিলুগা প্রজাতির। উত্তর মহাসাগরের ইংগোয়া দ্বীপে নরওয়ের একজন জেলে তিমিটির গায়ে যন্ত্র লাগানো দেখে একে আটক করে। পরে ওই জেলে তিমিটির গা থেকে যন্ত্রটি খুলে ফেলতে সক্ষম হন।

নরওয়ের সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী অধ্যাপক এডান রিকার্টসন বলেন, বিলুগা ডলফিনের মতোই বুদ্ধিমান প্রাণী। কুকুরের মতোই তাদের প্রশিক্ষিত করে তোলা যায়। তিমিটির গায়ে পাওয়া যন্ত্রটি গোপ্রোজাতীয় ক্ষুদ্র ক্যামেরা স্থাপনের জন্য উপযোগী। যন্ত্রটির গায়ের লেবেলে সেন্ট পিটার্সবুর্গ লেখা থেকে এটি রাশিয়ার বলেই মনে করছেন রিকার্টসন। তবে তিমিটির গায়ে এ সময় কোনো ক্যামেরা লাগানো ছিল না।

যে এলাকায় তিমিটি ধরা পড়েছে, তার কাছেই রাশিয়ার একটি নৌঘাঁটি রয়েছে। থ্রোমসো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রিকার্টসন বলেন, তাঁর রুশ সহকর্মীদের মাধ্যমে তিনি জানতে পেরেছেন, রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা বিলুগা তিমির গায়ে ক্যামেরা লাগিয়ে কোনো পরীক্ষা এই মুহূর্তে চালাচ্ছেন না। তবে রুশ নৌবাহিনী বিলুগা তিমি প্রশিক্ষণ দিয়ে সামরিক কাজে নিয়োজিত করছে বলে এক রুশ সহকর্মী তাঁকে তথ্য দিয়েছেন বলে জানান রিকার্টসন।

রাশিয়ার সম্প্রচারমাধ্যম গোভারিত মাস্কভা এ ঘটনায় রুশ কর্নেল ভিকতর বারানেতসের একটি সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। সেখানে কর্নেল ভিকতর বিলুগা তিমিকে গুপ্তচরবৃত্তির কাজে নিয়োগের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি তিমিকে গুপ্তচরবৃত্তিতে নিযুক্তই করব, নিশ্চয়ই তার গায়ে আমরা মোবাইল ফোন নম্বর লিখে রেখে যোগাযোগ করতে বলব না।’