শ্রীরামপুরে ভোটের তীব্র লড়াই হবে

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবজিৎ সরকার ও তীর্থঙ্কর রায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবজিৎ সরকার ও তীর্থঙ্কর রায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি।

পশ্চিমবঙ্গের লোকসভার ৪২টি আসনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ হলো শ্রীরামপুরের আসন। আসনটি হুগলি জেলার অন্তর্গত। এ আসনে এবার তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসের প্রার্থীর মধ্যে তীব্র লড়াই হবে বলে পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে।

শ্রীরামপুর আসনের বর্তমান সাংসদ তৃণমূলের প্রখ্যাত আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরও আইনজীবী। মমতার হয়ে রাজ্য সরকার এবং তৃণমূলের পক্ষে লড়ছেন তিনি। কলকাতা হাইকোর্ট ও ভারতের সুপ্রিম কোর্টে সারদা, রোজভ্যালি, নারদাসহ নানা মামলায় লড়েছেন তিনি। ২০০৯ ও ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এ আসন থেকে তিনি পরপর দুবার সাংসদ হয়েছেন। তৃণমূল এবারও তাঁকে এই আসনে মনোনয়ন দিয়েছে।

তৃণমূল বলেছে, এবারও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জিতবেন। মমতার উন্নয়নের জোয়ারে তাঁকে এবারও জয়ী করবেন শ্রীরামপুরের মানুষ।

তবে মমতার এই প্রার্থীকে এবার সহজে গোল দিতে দেবেন না বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসের প্রার্থীরা। বিজেপি প্রার্থী করেছে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী দেবজিৎ সরকারকে। তিনি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস বা রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের সদস্য। ১৯৮৯ সালে তিনি স্বয়ং সেবক হন। ন্যাশনালিস্ট লইয়ার্স ফোরামের রাজ্য সম্পাদকও ছিলেন তিনি। বিজেপির স্টেট লিগ্যাল সেলের সম্পাদকও হন তিনি। বর্তমানে তিনি বিজেপির রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এবার বিজেপি তাঁকেই মনোনয়ন দিয়েছে শ্রীরামপুর আসনে।

বামফ্রন্টের তীর্থঙ্কর রায় এবারও প্রার্থী হয়েছেন এই আসনে। গত ২০১৪ সালের নির্বাচনে এই আসনে লড়ে তিনি হেরে গিয়েছিলেন। হয়েছিলেন দ্বিতীয়। তৃতীয় হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী বাপ্পী লাহিড়ী। বাপ্পী লাহিড়ী হেরে যাওয়ার পর অবশ্য পরবর্তী সময় ছেড়েও দিয়েছিলেন রাজনীতি। এবার আর তিনি কোনো দলের প্রার্থী হননি।

বামপন্থী নেতা তীর্থঙ্কর রায় বাম ঘরানা পরিবারে জন্ম। তাঁর দাদু দীনেন ভট্টাচার্য তিনবার সাংসদ হয়েছিলেন। বাম আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ছাত্রাবস্থায় রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। হয়েছিলেন সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুর হুগলি জেলা কমিটির সদস্যও। এখনো তিনি নিজেকে বামপন্থীদের সঙ্গে যুক্ত রেখেছেন। বামফ্রন্ট এবারও তাঁকে প্রার্থী করেছে। এখনো তিনি সমাজসেবার সঙ্গে যুক্ত থেকে বাম আদর্শ প্রচার করছেন।

কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন দেবব্রত বিশ্বাস। বর্তমানে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। তিনি জড়িয়ে আছেন কলকাতা-মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে। ২০০৩ সালে তিনি কংগ্রেসের আঙিনায় পা রাখেন। হয়েছিলেন দলের একজন সম্পাদকও। ২০০১ সালে হন জাতীয় কংগ্রেস কমিটির সদস্য। এবার কংগ্রেস তাঁকে এই আসনে মনোনয়ন দিয়েছে।

এবার শ্রীরামপুর আসনে চতুর্মুখী লড়াই দেখতে পাবেন ভোটাররা। তৃণমূলের বিরোধী দলের তিন প্রার্থী ছাড়াও রয়েছে আরও কটি ছোট দলের প্রার্থী। তবে মূল লড়াই হবে তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেস প্রার্থীর মধ্যে।