লিবিয়া থেকে শরণার্থীরা এলেন ইতালিতে

ইতালির মাটিতে নামছেন লিবিয়া থেকে আসা শরণার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত
ইতালির মাটিতে নামছেন লিবিয়া থেকে আসা শরণার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

দাঙ্গাবিধ্বস্ত দেশ লিবিয়া থেকে বিমানে করে ১৪৭ জন শরণার্থী ইতালি এসে পৌঁছেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানী রোমের অদূরে প্যার্টকা ড্যা মারে সামরিক বিমানঘাঁটিতে লিবিয়া থেকে এ শরণার্থীদের আসার ঘটনায় সবাই বিস্মিত।

এক বছর আগে ইতালির জাতীয় নির্বাচনে ডানপন্থীদের সরকার গঠনের পর থেকে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রক্ষণশীল দল লেগা নর্ডের নেতা মাত্তো সালভানি সব সময় অভিবাসী ও শরণার্থীবিদ্বেষী কথা বলে আসছেন। হঠাৎ করেই বিমানে করে নিজ দেশে শরণার্থী আনার বিষয়ে ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা পোপ ফ্রান্সিসের অবদান রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত রোববার ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্থান ভ্যাটিকান সিটির সেন্টস পিটার চত্বরে পোপ ফ্রান্সিস আবেগময় আবেদনে মানবেতর অবস্থায় লিবিয়াতে অবস্থানরত শরণার্থীদের জন্য মানবিকতার করিডর খুলতে আকুল আবেদন করেন। নতুন করে লিবিয়ায় শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধের ফাঁদে নারী ও শিশুরা দুর্দশায় পড়েছে।

মানবিকতার বিষয়টির চেয়ে ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা পোপ ফ্রান্সিসের আবেদন রাখতে ইতালির রক্ষণশীল সরকার সোমবার সন্ধ্যায় ১৪৭ জন শরণার্থীকে ইতালিতে আশ্রয় দিয়েছে। লিবিয়া থেকে আসা শরণার্থীদের অধিকাংশই আফ্রিকার ইরিত্রিয়া ও সোমালিয়ার নাগরিক। কিছু নাগরিক সিরিয়া, সুদান ও ইথিওপিয়ার। ইতালিতে আসা শরণার্থীদের মধ্য ৬৮ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক ও অভিভাবকহীন। অনেকেই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে লিবিয়াতে এসে পৌঁছেছিলেন।

ইতালিতে আসার পর শরণার্থীদের আপাতত নিরাপত্তাবেষ্টনীর ভেতর রাখা হয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্রবিষয়ক সচিব স্টেফানো কান্দিয়ানী জানিয়েছেন, লিবিয়া থেকে আসা শরণার্থীদের আপাতত অভ্যর্থনা ক্যাম্পে রাখা হচ্ছে। শিগগিরই তাঁদের ইতালির বিভিন্ন শহরে শরণার্থীবিষয়ক মানবিক সংগঠনগুলোর তত্ত্বাবধানে পাঠানো হবে। পোপের আহ্বান রাখার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকেই জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলাম। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তো সালভানির অনুমোদনের পরই তাঁদের ইতালিতে আনা হয়েছে।’

ইউরোপের গণমাধ্যমগুলোয় বলা হচ্ছে, চরম অভিবাসী ও শরণার্থীবিদ্বেষী মাত্তো সালভানির মানবিকতা দেখানোর কৌশল হিসেবে এসব শরণার্থীকে আনা হয়েছে।