সাংসদ পদ হারাচ্ছেন মনমোহন সিং

মনমোহন সিং
মনমোহন সিং

সাংসদ পদ খোয়াতে চলেছেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। আসাম থেকে নির্বাচিত রাজ্যসভা সদস্য মনমোহনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৪ জুন। কিন্তু এবার তাঁর আসাম থেকে ফের নির্বাচিত হওয়ার কোনো সুযোগই নেই। ভারতের জাতীয় সংসদের সদস্য হতে হলে তাঁকে অন্য রাজ্য থেকে নির্বাচিত হতে হবে। 

এখনো অবশ্য আসামে রাজ্যসভার নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়নি। তবু মনমোহনকে নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ, ভারতের চলতি লোকসভা নির্বাচনেও তিনি কোনো কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হননি।

বছরের প্রায় পুরো সময়টাই মনমোহন সিং থাকেন দিল্লিতে। ৩ মতিলাল মার্গ তাঁর ঠিকানা। কিন্তু কাগজে-কলমে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের স্থায়ী ঠিকানা অসমের গুয়াহাটি শহরে হরুমটোরিয়ায় প্রয়াত কংগ্রেস নেতা হীতেশ্বর শইকিয়ার বাসভবন। ১৯৯১ সাল থেকেই তিনি সেখানকার ভাড়াটে। তাই গুয়াহাটিতেই ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে তাঁর এবং স্ত্রী গুরশরণ সিং কাউরের। এবারও সস্ত্রীক গুয়াহাটি এসে ভোট দিয়ে যান তিনি। টানা ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর আগে ৫ বছর অর্থমন্ত্রিত্ব চালিয়েছেন মনমোহন এই বাড়ির ভাড়াটে হিসেবেই। ১৯৯১ সাল থেকেই তিনি কাগজে-কলমে এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা।

মনমোহন সিংয়ের রাজ্যসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৪ জুন। ১৯৯১ সাল থেকে টানা রাজ্যসভায় জিতে এসেছেন আসাম বিধানসভার বিধায়কদের ভোটে। কিন্তু এবার আর সেই সুযোগ নেই। কারণ ১২৬ সদস্যের রাজ্য বিধানসভায় কংগ্রেসের সদস্যসংখ্যা মাত্র ২৫। অন্যদিকে, বিজেপির একারই রয়েছে ৬১ জন বিধায়ক। এ ছাড়া তাঁদের জোটসঙ্গীদের রয়েছে আরও ২৭ জন সদস্য। এআইইউডিএফের ১৩ জন সদস্য সমর্থন করলেও লাভ হবে না কংগ্রেসের। জিততে হলে প্রার্থীকে পেতে হবে অন্তত প্রথম পছন্দের ৪৩টি ভোট। কিন্তু এবার আসাম বিধানসভায় সাকল্যে ৩৮ জনের সমর্থন পেতে পারেন মনমোহন।

রাজ্যসভার নির্বাচনে বিধায়কদের দলের প্রতিনিধির সামনেই হুইপ মেনে ভোট দিতে হয়। হুইপ অমান্য করলে খারিজ হয়ে যায় সদস্যপদ। তাই ক্রশ ভোটিংয়ের সম্ভাবনাও নেই বললেই চলে। তাই মনে করা হচ্ছে, ৮৬ বছরের প্রবীণ কংগ্রেস নেতা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ মনমোহন সিংয়ের সংসদীয় রাজনীতি এখন বিরাট প্রশ্নের মুখে। তবে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী অবশ্য ইচ্ছে করলে কংগ্রেস শাসিত অন্য রাজ্য থেকে তাঁকে জিতিয়ে আনতে পারেন। মনমোহন সিং এখন জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় সংসদীয় দলের নেতা।