কাঁথিতে হ্যাটট্রিক হবে শিশিরের?

শিশির অধিকারী, দেবাশীষ সামন্ত, পরিতোষ পট্টনায়েক, দীপক দাস। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
শিশির অধিকারী, দেবাশীষ সামন্ত, পরিতোষ পট্টনায়েক, দীপক দাস। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

কাঁথিতে এবার তৃতীয়বারের মতো প্রার্থী হয়েছেন নামকরা ‘অধিকারী পরিবারের’ শিশির অধিকারী (৭২)। তৃণমূল এই আসনে এবারও প্রার্থী করেছে এই প্রবীণ নেতাকে। ২০০৯ ও ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাম প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন শিশির অধিকারী।

পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে কাঁথি একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন। বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহকুমা শহরটির আরেক নাম কন্টাই। অদূরে সমুদ্র। এই কাঁথি আসনের নির্বাচন ১২ মে। এ আসনে জমে উঠেছে ভোটযুদ্ধ। প্রচারে এগিয়ে তৃণমূল। দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি। এরপর বাম ফ্রন্ট ও কংগ্রেস।

শিশির অধিকারী অনেক দিন ধরে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আগে কংগ্রেস করতেন। তৃণমূলের জন্ম হলে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। কাঁথি পৌরসভায় ২৫ বছর চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৫ বছর বিধায়ক ছিলেন। এবারও তিনি জয়ের স্বপ্ন দেখছেন। জয়ের জন্য দৌড়াচ্ছেন কাঁথিজুড়ে। অধিকারী পরিবারের এলাকায় বেশ নামডাক। ১৯২৯ থেকে ১৯৪৩ সালে ব্রিটিশরা তিনবার পুড়িয়ে দিয়েছিল অধিকারী বাড়ি। সেই থেকে অধিকারী পরিবারকে স্বাধীনতাসংগ্রামী পরিবার বলে ডাকা হয়। শিশির অধিকারী এবার লড়ছেন সাংসদ হিসেবে হ্যাটট্রিক করার লক্ষ্য নিয়ে।

বিজেপি এবার এই আসনে প্রার্থী করেছে প্রখ্যাত চিকিৎসক দেবাশীষ সামন্তকে। তাঁর ভক্তের সংখ্যা অনেক বেশি। তাঁর বিশ্বাস, শিশির অধিকারীর হ্যাটট্রিক হওয়ার পথে তিনিই হবেন বাধা। তিনি এবার জিতবেন। মানুষ আর অধিকারী বাড়ির শাসন চায় না। তৃণমূলের শোষণ আর অত্যাচার চায় না। জনগণ চায় সুখী, সুন্দর ও শান্তির বাংলা। দেশজুড়ে ঝড় উঠেছে মোদির। সেই ঝড়ে তিনি এবার উতরে যাবেন।

বাম ফ্রন্ট প্রার্থী করেছে দলের এক যুবনেতাকে। নাম পরিতোষ পট্টনায়েক। তিনি এখন যুক্ত রয়েছেন বাম দল সিপিএমের যুব সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের সঙ্গে। গরিব ঘরের এই নেতা এলাকায় প্রচুর কাজ করছেন। শুধু তা–ই নয়, খেজুরিতে তৃণমূলের আক্রমণে বন্ধ থাকা সিপিএম পার্টি অফিসের দরজা তিনি খুলেছেন দীর্ঘ ১০ বছর পর। পরিতোষ ছাত্রাবস্থা থেকে যুক্ত আছেন গণ-আন্দোলনের সঙ্গে। তিনি বলেছেন, তাঁর লক্ষ্য সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষকে বাঁচার পথ দেখানো। তাই তিনি মানুষের ভালোবাসাকে সঙ্গে করে লালঝান্ডা হাতে নিয়ে এখন ঘুরছেন কাঁথির প্রত্যন্ত এলাকায়।

এই আসনে কংগ্রেস প্রার্থী করেছে দীপক দাসকে। দীপক দাস একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। এলাকায় তাঁর প্রচুর সুনাম রয়েছে। দীপক দাস বলেছেন, তিনি জয়ের জন্য মাঠে নেমেছেন। এলাকার মানুষ এখন আর অধিকারী পরিবারের শাসন চায় না। চায় পরিবর্তন। জনগণ বিজেপির শাসনও চায় না। সিপিএমেরও শাসন দেখেছে এলাকাবাসী, তাদেরও চায় না জনগণ। তাই নতুন স্বপ্ন নিয়ে এগিয়েছেন তিনি। দীপক দাসের ভাষ্য, এই চতুর্মুখী লড়াইয়ে তিনি জিতেও যেতে পারেন।