পশ্চিম ত্রিপুরায় কাল ফের ভোট

পশ্চিম ত্রিপুরায় ফের ভোট গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি আধা সেনা জওয়ানদের। আগরতলায়, শনিবার। ছবি: প্রথম আলো
পশ্চিম ত্রিপুরায় ফের ভোট গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি আধা সেনা জওয়ানদের। আগরতলায়, শনিবার। ছবি: প্রথম আলো

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা কেন্দ্রের ১ হাজার ৬৭৯টির মধ্যে ১৬৮টি কেন্দ্রে কাল রোববার ফের ভোট। সব কেন্দ্রেই আধা সেনার নজরদারিতে ভোট করার জন্য প্রস্তুত ভারতীয় নির্বাচন কমিশন। তবে দুই বিরোধী দল সিপিএম ও কংগ্রেস ভোটে লড়লেও সব কেন্দ্রে ভোট চেয়ে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের দিকে তাকিয়ে তারা।

এক মাস আগে, ১১ এপ্রিল ভারতের প্রথম দফা নির্বাচনের সময়ই পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা কেন্দ্রেও ভোট গ্রহণ পর্ব মিটে যায়। কিন্তু ব্যাপক গোলমাল আর অনিয়মের অভিযোগে কাল রেকর্ডসংখ্যক কেন্দ্রে (১৬৮) ফের ভোট হচ্ছে।

পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার বিকাশ সিং মুঠোফোনে প্রথম আলোকে জানমিয়েছেন, প্রতিটি কেন্দ্রেই থাকবে কেন্দ্রীয় আধা সেনা জওয়ানরা। ভোটারদের আস্থা বাড়াতে আগে থেকেই শুরু হয়েছে টহলদারিও।

১১ এপ্রিল পশ্চিম ত্রিপুরার ১ হাজার ৬৭৯টি বুথের ১৩ লাখ ৪৭ হাজার ৩৮১ জন ভোটারের মধ্যে ৮৩ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোটার ভোটদানে অংশ নেন। কাল ফের ভোট দেবেন ১ লাখ ৪১ হাজার ৩৫১ জন।

আজ শনিবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে ফের ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি। ভোট কর্মীরা নিজ নিজ নির্বাচনী বুথে যেতে শুরু করেছেন। নির্বিঘ্নে ভোট গ্রহণে সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কমিশন।

ফের ভোট প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ত্রিপুরার উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বর্ষীয়াণ বিজেপি নেতা জিষ্ণু দেববর্মা প্রথম আলোকে বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচনের আয়োজন ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। তাই ফের ভোটের দায়ও তাদের। তবে এতে সামগ্রিকভাবে রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট হলো।’

অন্যদিকে, কংগ্রেস ও সিপিএম রাজ্যের বিজেপি সরকারকেই এর জন্য দায়ী করেছে। সিপিএম ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছে। আর সোমবার কংগ্রেসও মামলা করতে চলেছে। তবে দুদলই কালকের ভোটে অংশ নিচ্ছে।

কংগ্রেস প্রার্থী সুবল ভৌমিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘১১ এপ্রিলের ভয়ংকর স্মৃতি মাথায় রেখেই আমরা ফের ভোটে অংশ নিচ্ছি। নির্বাচন কমিশন প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনও আস্থাবর্ধক কিছুই করেনি। সোমবারই আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছি। আমাদের দাবি পুরো কেন্দ্রেই ফের ভোট।’

একই দাবিতে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন সিপিএম প্রার্থী তথা বর্তমান সাংসদ শঙ্কর প্রসাদ দত্ত। প্রথম আলোকে মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘১৬৮ বুথে ফের ভোট করে কমিশনই স্বীকার করে নিল ভোটে কারচুপির অভিযোগ সত্যি ছিল। তাই আমরা গোটা কেন্দ্রেই ফের ভোট চাই।’

১১ এপ্রিল প্রথম দফার ভোটের পরই পশ্চিম ত্রিপুরার রিটার্নিং অফিসার সন্দীপ মাহাতেকে সরিয়ে বিকাশ সিংকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে সঙ্গে রাজ্য পুলিশের অতিরিক্ত প্রধান রাজীব সিংকেও ছুটিতে পাঠায় কমিশন।

আগরতলার মহকুমা পুলিশ প্রধান আধিকারিক অজয় কুমার দাস প্রথম আলোকে বলেন, কড়া পুলিশি বন্দোবস্তের ব্যবহার করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা বাহিনী টহলদারি শুরু করেছে।

এখন দেখার নির্বিঘ্নে ফের ভোট শেষ করতে সক্ষম হয় কি না, ভারতীয় নির্বাচন কমিশন। প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে।