যুদ্ধাবস্থার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকেই দায়ী করছে ইউরোপ

মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস আরলিংটন। ছবি: এএফপি
মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস আরলিংটন। ছবি: এএফপি

মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র আবারও যে যুদ্ধের পাঁয়তারা করছে, সেটির নিন্দা করেছেন ইউরোপের নেতৃস্থানীয় রাজনীতিকেরা। এ ছাড়া ইউরোপীয় নেতারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক রাজনীতিকে আগুন নিয়ে খেলার সঙ্গেও তুলনা করেছেন।

পারমাণবিক চুক্তি থেকে আংশিক বের হয়ে যাওয়া সম্পর্কিত ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ইউরোপীয় দেশগুলোকে দুই মাস সময় বেঁধে দেওয়ার পরপরই যুক্তরাষ্ট্র পারস্য উপসাগর অভিমুখে মার্কিন রণতরী আব্রাহাম লিংকন ও ইউএসএস আরলিংটন যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে।

লুক্সেমবার্গের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাঁ আসেলবর্ন গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক রাজনীতির সমালোচনা করে বলেছেন, তাঁরা নিজেরা পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে এসে এখন ইরানের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধের পাঁয়তারা করছেন। এ ধরনের উদ্যোগকে আগুন নিয়ে খেলার সঙ্গেও তুলনা করেছেন জ্যাঁ আসেলবর্ন। তিনি আরও বলেন, ট্রাম্পের ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন সম্পর্কিত রাজনীতি ওই অঞ্চলে ক্রমেই বিপদ ডেকে আনবে।

জার্মানির ডের স্পিগেল পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জার্মানির পররাষ্ট্রসচিব নীলস আনেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন ভারসাম্যহীন রাজনীতি করছে। জার্মানির পরিবেশবাদী সবুজ দলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক রাজনীতিক ইউর্গেন ট্রিটিনও একই পত্রিকায় বলেছেন, বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কিত উত্তেজনার সব দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রকে নিতে হবে। তিনি আরও বলেছেন, মার্কিনরা ইরানের সঙ্গে সংঘাতের জন্য একটি অজুহাত খুঁজছে।

ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তরে ইইউয়ের পররাষ্ট্রবিষয়ক মুখপাত্র হেলগা স্মিড বলেছেন, ইরান এখনো পারমাণবিক চুক্তি থেকে বের হয়ে যায়নি। তাই চুক্তি লঙ্ঘনের দায়ে ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টি করা অর্থহীন।

এর আগে জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ও ইইউয়ের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিশনার ফেদেরিকা মগেরিনি এক যৌথ বিবৃতিতে পারমাণবিক কর্মসূচি বা জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশনের (জেসিপিওএ) অধীনে ইরানের সঙ্গে করা চুক্তি মেনে চলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানান। তাঁরা জেসিপিওএ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বের হয়ে যাওয়া ও ইরানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে অর্থনৈতিক অবরোধ বিষয়টিরও সমালোচনা করেন।

ইরান ২০১৫ সালে ছয়টি পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। চুক্তির পরপরই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশ ইরানের ওপর আরোপিত নানা অর্থনৈতিক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়। তবে ২০১৮ সালের ৪ মে যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র আবারও ইরানের প্রতি অর্থনৈতিক অবরোধ সৃষ্টি করেছে। একই সঙ্গে অন্যদেরও এই অবরোধে শামিল হওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।