নিউজিল্যান্ডে কর্মী শোষণের দায়ে বাংলাদেশি দম্পতির কারাদণ্ড

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউজিল্যান্ডের নাগরিক মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম ও নাফিসা আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউজিল্যান্ডের নাগরিক মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম ও নাফিসা আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক নাগরিক দম্পতিকে কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিবাসী কর্মীদের শোষণ করার বহু অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে দম্পতির এক মিষ্টি তৈরির কারখানায় কর্মীদের ঘণ্টাপ্রতি মাত্র ৬ ডলার দিয়ে কাজ করানোর অভিযোগও রয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত দম্পতির বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে নিউজিল্যান্ডে অভিবাসীদের নিয়ে আসাসহ মানব পাচারের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠলেও তা প্রমাণিত হয়নি। গতকাল অকল্যান্ডের জেলা আদালতে এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউজিল্যান্ডের নাগরিক মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম ও নাফিসা আহমেদ দীর্ঘদিন ধরেই অভিবাসী কর্মী নিয়োগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তাঁদের অকল্যান্ডে রয়েল সুইট ক্যাফে নামের একটি মিষ্টি তৈরির ব্যবসা ছিল। প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আতিকুলের বিরুদ্ধে কর্মী শোষণের ১০টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাঁর স্ত্রী নাফিসা প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন। সাতটি অভিযোগে নাফিসা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।

এই দম্পতির বিরুদ্ধে আনা বেশির ভাগ অভিযোগই ছিল ন্যূনতম পারিশ্রমিকের বিনিময়ে অভিবাসী কর্মীদের দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করানোর। এমনকি পুরো মজুরি এবং সাপ্তাহিক ছুটিও তাঁদের দেওয়া হতো না বলে অভিযোগ করা হয়। বাংলাদেশি দম্পতির এই কর্মী শোষণের কথা প্রথম সামনে আসে যখন তাঁদের মিষ্টি দোকানের প্রধান দুই রাঁধুনি স্থানীয় পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। অভিযোগপত্রে বলা হয়, অস্থায়ী ভিসায় নিউজিল্যান্ডে আসা কর্মীদের আইন অমান্য করে বেশি সময় কাজ করাত মালিকপক্ষ। এমনকি কর্মীদের পাসপোর্ট জব্দ করে রাখারও অভিযোগ করা হয়। কাজের চাপে অনেক কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়ার কথাও জানান তাঁরা। অভিযোগকারীদের একজন তাঁর বয়ানে বলেন, ‘আমরা অতিরিক্ত কাজের চাপে হয়তো মারাই যাব।’

আদালত সব তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বাংলাদেশি দম্পতিকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড দেন। কর্মীদের পাসপোর্ট ফিরিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেন আদালত।