শ্রীলঙ্কায় উত্তেজনা, ফেসবুক বন্ধ

ফেসবুক
ফেসবুক

মুসলিমবিরোধী দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় শ্রীলঙ্কায় আজ সোমবার ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে এ তথ্য জানানো হয়পুলিশ জানায়, এক দোকানি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ছিলাও শহরে মুসলিম মালিকানাধীন দোকানে হামলা চালায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের একদল লোক। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছোড়েন। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের শহরেও। সেখানকার মুসলিম মালিকানাধীন দোকানগুলোয় হামলা চালানো হয়।

গত ২১ এপ্রিল ইস্টার সানডের দিন শ্রীলঙ্কার তিনটি হোটেল ও তিনটি গির্জায় জঙ্গিদের হামলায় ২৫৮ জন প্রাণ হারান।

পুলিশ জানিয়েছে, ছিলাও ও আশপাশের এলাকায় জারি করা রাতের কারফিউ আজ শিথিল করা হয়েছে। তবে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল আছে।

স্থানীয় এক মুসলিম দোকানি ফেসবুকে পোস্ট দেন, ‘বেশি হেসো না। একদিন কাঁদবে।’ স্থানীয় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ এটাকে হামলার হুমকি হিসেবে নেয়। তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওই ব্যক্তির দোকান গুঁড়িয়ে দেয়। এ সময় উত্তেজিত জনতা পলাশের একটি মসজিদে ভাঙচুর চালায়। পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চালায়। গতকাল রোববার বিকেল থেকে আজ সকাল পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ ছিল।

ইসলাম ধর্মীয় নেতাদের প্রধান সংগঠন অল গিলন জামাআতুল উলামা বলেছে, ‘ইস্টার সানডের দিন হামলার ঘটনার পর থেকে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি সন্দেহ বাড়ছে। আমরা মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের প্রতি ধৈর্য ধরার, নিজেদের কর্মকাণ্ড নজরদারি করার এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অহেতুক কিছু পোস্ট না করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রবেশের সুযোগ বন্ধ করে দিতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়।

গির্জায় হামলার ঘটনার পর প্রথমবারের মতো গতকাল ক্যাথলিক গির্জাগুলো গণপদযাত্রা করলে অস্থিরতা নতুন করে ছড়িয়ে পড়ে। বোমা হামলার ঘটনার পর থেকেই দেশটিতে জরুরি অবস্থা চলছে। সন্দেহভাজন যে–কাউকে গ্রেপ্তার ও দীর্ঘদিন আটকে রাখার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও পুলিশকে।

বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রীলঙ্কায় মুসলিম জনগোষ্ঠী প্রায় ১০ শতাংশ। খ্রিষ্টধর্মাবলম্বী আছে প্রায় ৭ দশমিক ৬ শতাংশ।