সুন্দরবনের রাজা বদলাবে?

চৌধুরী মোহন জাটুয়া, শ্যামা প্রসাদ হালদার, শরৎ হালদার ও কৃত্তিবাস সর্দার। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
চৌধুরী মোহন জাটুয়া, শ্যামা প্রসাদ হালদার, শরৎ হালদার ও কৃত্তিবাস সর্দার। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফার তালিকায় রয়েছে সুন্দরবন অঞ্চলের মথুরাপুর আসন। গত দুবার এ আসনে দোর্দণ্ড প্রতাপে জিতেছেন তৃণমূলের চৌধুরী মোহন জাটুয়া। আসনটি এবারও কি তিনি ধরে রাখতে পারবেন, নাকি সুন্দরবনের রাজা বদলাবে? জবাব মিলবে ২৩ মে।

ভারতের ৫৪৩ আসনের লোকসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ এখন শেষ পর্যায়ে। সাত দফার এই নির্বাচনের শেষ দফার ভোট বাকি রয়েছে। ১৯ মে এই শেষ দফায় ভারতের আটটি রাজ্যের ৫৯টি আসনে নির্বাচন হবে।

ওই দিন পশ্চিমবঙ্গের নয়টি আসনেও ভোট নেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে কলকাতা উত্তর ও দক্ষিণ, যাদবপুর, দমদম, বারাসাত, বসিরহাট ও ডায়মন্ড হারবার আসন। আরও রয়েছে সুন্দরবন অঞ্চলের মথুরাপুর আসনও। এই মথুরাপুর আসনটি মূলত পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন অঞ্চলের সাতটি বিধানসভা আসন নিয়ে গঠিত। আসনটি আবার তপসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত।

এবার এই আসনেও লড়াই জোরদার হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের চার বৃহৎ দল ইতিমধ্যে প্রার্থী নিয়ে মাঠে নেমেছে। তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি, বামফ্রন্ট এবং জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থীরা মাঠে নেমে প্রচারে ঝড় তুলেছেন। জয়ের ব্যাপারে চার দলই এবার আশাবাদী।

এই মথুরাপুর আসনের বর্তমান সাংসদ হলেন তৃণমূলের চৌধুরী মোহন জাটুয়া। ২০১৪ সালে তিনি সিপিএম প্রার্থী রিংকি নস্করকে পরাজিত করেন। আর ২০০৯ সালে জাটুয়া পরাজিত করেছিলেন সিপিএম প্রার্থী অনিমেষ নস্করকে। দুবারের বিজয়ী চৌধুরী মোহন জাটুয়া মাঠে নেমেছেন তৃণমূলের টিকিট নিয়েই।

চৌধুরী মোহন জাটুয়া কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মন্ত্রিসভার তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ২০০১ সালে তিনি এই অঞ্চলের মন্দিরবাজার বিধানসভা আসন থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন। তিনি এই রাজ্যের পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজি ছিলেন। ৮০ বছর বয়সী জাটুয়া ফের নেমেছেন নির্বাচনী লড়াইয়ে। তিনি বলেছেন, মানুষ এবারও তাঁকে আশীর্বাদ করেছেন। সুন্দরবন অঞ্চলের মানুষ জানেন, সুন্দরবনের উন্নয়নের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতার বিকল্প নেই। মমতাই এই রাজ্যের উন্নয়নের পথ দেখিয়েছেন।

মথুরাপুর আসনে এবার বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন শ্যামা প্রসাদ হালদার। তিনি বলছেন, মোদি–হাওয়া এবারও দেশজুড়ে। সেই হাওয়ার এবার ঝাপটা পড়েছে মথুরাপুরে। মানুষ এবার নতুন মুখ চাইছে। নতুন নেতা চাইছে। তাই তিনি আত্মবিশ্বাসী, এবার বিজেপিই জিতবে এই আসনে। শ্যামা প্রসাদ ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিষ্ণুপুর আসনে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে গিয়েছিলেন।

বামফ্রন্টের শরিক দল সিপিএম এই আসনে প্রার্থী করেছে দলীয় নেতা শরৎ হালদারকে। আর কংগ্রেস প্রার্থী করেছে কৃত্তিবাস সর্দারকে।

সিপিএমের প্রার্থী শরৎ হালদার বলেছেন, সুন্দরবন একসময় বামদের ঘাঁটি ছিল। এরপর তা দখল করে তৃণমূল। মানুষ তৃণমূলের অত্যাচার দেখেছে। তাই এবার মানুষ পরিবর্তন চাইছে।

কংগ্রেস প্রার্থী কৃত্তিবাস সর্দার বলেছেন, দেশব্যাপী এবার কংগ্রেস হাওয়া জোরদার। মানুষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপিকে। ছুড়ে দিয়েছে মোদিকে। কাছে টেনে নিয়েছে কংগ্রেস আর রাহুল গান্ধীকে। আর পশ্চিমবঙ্গে মমতা হাওয়ায় ভাটা পড়েছে। তাই এবার ভোট ভাগাভাগিতে কংগ্রেসও জিততে পারে এই আসনে।