আলাবামায় গর্ভপাত নিষিদ্ধ করে আইন পাস

নিজের জরায়ুর ওপর পূর্ণ অধিকারের দাবিতে পথে নেমেছেন মার্কিন নারীরা। ছবি: বিবিসি।
নিজের জরায়ুর ওপর পূর্ণ অধিকারের দাবিতে পথে নেমেছেন মার্কিন নারীরা। ছবি: বিবিসি।

গর্ভপাত নিয়ে মার্কিন সমাজ ও রাজনীতি সব সময় উত্তপ্ত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য আলাবামার আইনপ্রণেতারা রাজ্যটিতে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন আজ বুধবার। রাজ্যের সিনেট অনুমোদিত এই আইনটি শুধু ধর্ষণ ও নিকট আত্মীয়ের মধ্যে যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।

সিনেটে গর্ভপাতের পক্ষে ভোট পড়েছে মাত্র ছয়টি। অন্যদিকে গর্ভপাতের বিপক্ষে ২৫ ভোট পেয়ে বিপুল ব্যবধানে পাস হয় আইনটি। এবার আইনটি রিপাবলিকান গভর্নর কাই আইভির অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করছে। আইভি স্বাক্ষর করবেন কি না, এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে শুরু থেকেই গর্ভপাতের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে দেখা গেছে তাঁকে।

সক্রিয় অংশগ্রহণকারীরা আশা করছেন, ১৯৭৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাত বৈধ ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তাকে চ্যালেঞ্জ করতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে এই আইনটি। চলতি মাসের শুরুর দিকে আলাবামার হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসে ৭৪-৩ ভোটে পাস হয় গর্ভপাতবিরোধী বিলটি।

কেবল মায়ের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে বিশেষ পরিস্থিতিতেই গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া হবে। দ্য ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর উইমেন এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে দাবি করেছে। নিজের জরায়ুর ওপর নারীদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন তাঁরা। তাঁদের মতে, আসন্ন নির্বাচনে গর্ভপাতবিরোধী প্রার্থীদের রাজনৈতিক সমর্থন জানানোর একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া এটি।

দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পরিকল্পিত অভিভাবকত্ব বিষয়ক আইনজীবীরা এই সিদ্ধান্তকে ‘আলাবামাসহ গোটা দেশের নারীদের জন্য অভিশাপ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। আইনজীবী স্ট্যাসি ফক্স বলেন, আলাবামার রাজনীতিবিদরা এই ভোটের জন্য আজীবন তিরস্কারের সম্মুখীন হবেন। প্রতিটি নারী যেন তাঁদের এই অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার পেছনে কাদের হাত আছে, তা জানতে পারেন, সে ব্যাপারেও কাজ করবেন স্ট্যাসিরা।

রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ও আইনসভার প্রস্তাব উত্থাপক টেরি কলিন্স বলেন, ‘আমাদের আইন বলে মায়ের গর্ভে থাকা প্রতিটি শিশুও একেকজন মানুষ।’

রিপাবলিকান সিনেটর ক্লাইড চ্যামব্লিস বলেন এই আইনের ফলে ১৯৭৩ সালের নারীদের গর্ভপাতের অধিকারবিষয়ক আইনটি বাতিল করতে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সুযোগ হলো। এই বিতর্ক শুরু হওয়ার আগে ডেমোক্র্যাট রজার স্মিদার্ম্যান বলেন, ‘আমরা ১২ বছরের একটি কিশোরীকে জানিয়ে দিতে চাই, ধর্ষণ বা নিকট আত্মীয়ের মধ্যে যৌন সম্পর্ক ছাড়া অন্য কোনো কারণে গর্ভবতী হলে তার হাতে কোনো বিকল্প সুযোগ নেই।’