বাগদাদে মার্কিন দূতাবাস থেকে কর্মী সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে

ইরাকের রাজধানী বাগদাদের মার্কিন দূতাবাস। ছবি: রয়টার্স
ইরাকের রাজধানী বাগদাদের মার্কিন দূতাবাস। ছবি: রয়টার্স

ইরাকের রাজধানী বাগদাদের মার্কিন দূতাবাস থেকে হেলিকপ্টারে করে কর্মীদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। মার্কিন সূত্রের দাবি, ইরান যদি গত রোববার পারস্য উপসাগরে তেলবাহী চারটি জাহাজের ওপর হামলা চালাতে পারে, তবে ইরাকে মার্কিন কর্মীদের ওপর হামলা চালানোও অস্বাভাবিক কিছু নয়। কাজেই ইরানের পক্ষ থেকে হুমকির কথা মাথায় রেখে গতকাল বুধবার এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।

তেলবাহী জাহাজে অন্তর্ঘাতমূলক হামলার দায় এখনো কেউ স্বীকার করেনি। সৌদি আরব গত মঙ্গলবার জানায়, সশস্ত্র ড্রোন হামলায় তাদের দুটি তেল উত্তোলন স্টেশন আক্রান্ত হয়েছে। এ ঘটনার পর ওয়াশিংটন ও তেহরানের সম্পর্ক আরও তিক্ততার দিকে এগিয়ে গেল বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, মার্কিন নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, উপসাগরে চারটি তেলবাহী ট্যাংকারে হামলা ইরানই চালিয়েছে। এ হামলা ‘আশীর্বাদ’ হয়ে এসেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। হরমুজ প্রণালিতে সৌদির অপরিশোধিত তেলবাহী দুটি জাহাজে এই হামলা হয়। আরও দুটি হামলা হয় আরব আমিরাতের পতাকাবাহী বার্জ ও নরওয়েতে নিবন্ধিত তেলের ট্যাংকারে। এ হামলায় ইরানি কর্মকর্তারা সরাসরি ভূমিকা রেখেছেন কি না, এর কোনো তথ্য–প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে নেই।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তেলবাহী জাহাজ হামলাকে ‘উদ্বেগজনক ও ভয়ংকর’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি এ হামলার যথাযথ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের রক্ষণশীল সেনাবাহিনী রেভল্যুশনারি গার্ডসকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ উপাধি দেওয়ায় এবং ইরানের তেল রপ্তানি কার্যক্রম কমানোর সিদ্ধান্ত নিলে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করেন ট্রাম্প। তাঁর বিশ্বাস, এ ধরনের আর্থিক চাপে পড়লে তেহরান বাধ্য হয়ে পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রমে কঠোর সীমাবদ্ধতা মেনে চলবে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান অবরোধকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে তেহরান এখন পর্যন্ত পারমাণবিক চুক্তি অনুযায়ী বাধ্যবাধকতা মেনে চলছে বলে দাবি করেন তিনি। টোকিওতে জারিফ তাঁর জাপানি প্রতিনিধি তারো কোনোর সঙ্গে বৈঠকে বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার সত্ত্বেও আমরা সর্বোচ্চ সংযম চর্চা করছি।’

ট্রাম্পের পূর্বসূরি বারাক ওবামার সঙ্গে সমঝোতা অনুযায়ী, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধি ক্ষমতা দমিয়ে রাখতে রাজি হয়। অর্থনৈতিক অবরোধ কমাতে পারমাণবিক বোমা তৈরির পথ থেকে সেবার সরে আসে ইরান।