ভাগ্য পরীক্ষায় মিমি-নুসরাতসহ কয়েকজন তারকা প্রার্থী
দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে আজ রোববার সকাল সাতটা থেকে পশ্চিমবঙ্গে লোকসভার নয়টি আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গে নয় আসনে আজকের নির্বাচনে ভাগ্য পরীক্ষার মুখোমুখি বেশ কয়েকজন তারকা প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে দুজন চিত্রনায়িকা মিমি চক্রবর্তী ও নুসরাত জাহান। আরও আছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা, কলকাতা পৌর করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আইনজীবী সিপিএমের বিকাশ ভট্টাচার্য, প্রবীণ রাজনীতিবিদ তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়, নেতাজির ভ্রাতুষ্পুত্র ও বিজেপি প্রার্থী চন্দ্র কুমার বোস, যুব তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতার ভাইয়ের ছেলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, চিকিৎসক সিপিএমের ফুয়াদ হালিম ও তৃণমূলের কাকলি ঘোষ দস্তিদার প্রমুখ।
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের শেষ ধাপের ভোট আজ। সাত ধাপের এই নির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে ২৩ মে।
পশ্চিমবঙ্গে লোকসভার আসন ৪২টি। আগে ৬ দফায় ভোট নেওয়া হয় ৩৩টি আসনে। আজ নেওয়া হচ্ছে বাকি নয়টি আসনের ভোট।
নয়টি আসন হলো কলকাতা উত্তর, কলকাতা দক্ষিণ, দমদম, যাদবপুর, বারাসাত, বসিরহাট, ডায়মন্ড হারবার, জয়নগর ও মথুরাপুর।
নয়টি আসনে তৃণমূল, বিজেপি, বামফ্রন্ট, কংগ্রেসসহ আরও কয়েকটি ছোট দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অংশ নিয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রার্থী সংখ্যা ১১১।
১২ মে ষষ্ঠ দফার নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের আটটি আসনে কমবেশি সহিংস ঘটনা ঘটে। তাই এবার এই শেষ দফার নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বাড়ানো হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছে, আজকে এই রাজ্যের নয় আসনের জন্য নিয়োগ করা হয়েছে ৭১০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রেই নিয়োগ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
সকাল সাতটায় যথারীতি ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ভোট শুরু পর দু-একটি কেন্দ্র থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।
কলকাতার নিউটাউনের কদমপুকুরে বিজেপির একটি দলীয় বুথ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, এই বুথ পুড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।
বেলগাছিয়ার ভোটকেন্দ্রে তিনজন সিপিএম এজেন্টকে প্রচণ্ড মারধর করে বুথ থেকে বের করে দিয়েছে তৃণমূল। একজনের অবস্থা গুরুতর। এই ঘটনার প্রতিবাদে ভোটকেন্দ্রের কাছে অবস্থান ধর্মঘটে বসেন সিপিএম প্রার্থী কনীনিকা ঘোষ।
জয়নগর, বালিগঞ্জ ও কসবায় বিজেপি ও সিপিএমএর এজেন্টকে বসতে দেয়নি তৃণমূল।
মথুরাপুরে বিজেপির ভোরদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে এলাকায় বোমা ফাটানো হয়। ভোটাররা বলেছেন, বিজেপির ভোটারদের মূলত ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল।
এ ছাড়া অনেক কেন্দ্রে বেশ কিছু ইভিএম যন্ত্র খারাপ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অন্যান্য ভোটকেন্দ্রে মোটামুটি সকাল ১০টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলার খবর মিলেছে।
এর বাইরে অনেকটা উৎসবের মেজাজে ভোট চলছে। প্রচণ্ড রোদের কারণে অনেক জায়গায় শেষ রাত থেকেই ভোটাররা লাইনে দাঁড়ান। সকালে ভোটকেন্দ্রের সামনে সারি দেখা যায়। সবাই চাইছিলেন রোদের তীব্রতা বাড়ার আগেই ভোট দিতে।
কলকাতার যাদবপুর আসনের উল্লেখযোগ্য প্রার্থীরা হলেন তৃণমূলের মিমি চক্রবর্তী, বিজেপির অনুপম হাজরা ও বামফ্রন্টের বিকাশ ভট্টাচার্য।
বসিরহাট আসনে তৃণমূলের নুসরাত জাহান, বিজেপির সায়ন্তন বসু, বামফ্রন্টের পল্লব সেনগুপ্ত ও কংগ্রেসের কাজী আবদুর রহিম।
বারাসাত আসনে তৃণমূলের কাকলি ঘোষ দস্তিদার, বিজেপির মৃণালকান্তি দেবনাথ, বামফ্রন্টের হরিপদ বিশ্বাস ও কংগ্রেসের সুব্রতা দত্ত।
দমদম আসনে তৃণমূলের সৌগত রায়, বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য, বামফ্রন্টের নেপালদেব ভট্টাচার্য ও কংগ্রেসের সৌরভ সাহা।
জয়নগরে তৃণমূলের প্রতিমা মণ্ডল, বিজেপির অশোক কান্ডারি, বামফ্রন্টের সুভাষ নস্কর ও কংগ্রেসের তপন মণ্ডল।
মথুরাপুরে তৃণমূলের চৌধুরী মোহন জাটুয়া, বিজেপির শ্যামাপ্রসাদ হালদার, বামফ্রন্টের শরৎ হালদার ও কংগ্রেসের কৃত্তিবাস সর্দার।
ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপির নিরঞ্জন রায়, বামফ্রন্টের চিকিৎসক ফুয়াদ হালিম ও কংগ্রেসের সৌম্য আইচ রায়।
কলকাতা উত্তর আসনে তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপির রাহুল সিনহা, বামফ্রন্টের কনীনিকা ঘোষ ও কংগ্রেসের সৈয়দ শহীদ ইমাম।
কলকাতা দক্ষিণ আসনে তৃণমূলের মালা রায়, বিজেপির চন্দ্র কুমার বোস, বামফ্রন্টের নন্দিনী মুখার্জি ও কংগ্রেসের মিতা চক্রবর্তী।