বুথফেরত জরিপ কতটুকু ঠিক হয়?

কলকাতার মেটিয়াব্রুজে ভোটার লাইন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
কলকাতার মেটিয়াব্রুজে ভোটার লাইন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতে ছয় সপ্তাহের তীব্র ভোট লড়াইয়ের শেষ হচ্ছে আজ। ফল অবশ্য প্রকাশ হবে আগামী বৃহস্পতিবার। আজ বেরোবে বুথফেরত জরিপের ফলাফল। আজ সপ্তম ও শেষ দফার ভোট গ্রহণের পর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় এ ফল প্রকাশিত হতে থাকবে। প্রশ্ন হলো, এসব বুথফেরত জরিপ কতটুকু ঠিক হয়েছে ভারতের আগের নির্বাচনগুলোতে?

ভারতে আসলে বুথফেরত জরিপ কখনোই খুব বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণিত হয়নি। ভোটের আগে দেওয়া ফলাফল শেষতক ভুল হয়েছে। এর বড় উদাহরণ ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচন। সেবার বলা হয়েছিল, বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট আবার জিতছে। আবার ২০০৯ সালে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোটের আসন কম দেখানো হয়েছিল। তবে ২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রায় সব জরিপেই নিশ্চিত করা হয়েছিল যে বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসছে।

গতবারের নির্বাচনে বেশির ভাগ বুথফেরত জরিপে বলা হয়েছিল, বিজেপি দু শর বেশি আসন পাবে। এর আগে ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে দলটি সর্বোচ্চ ১৮২টি আসন পেয়েছিল। শুধু টাইমস নাউ-ওআরজি বাদ দিয়ে সব জরিপে বলা হয়েছিল, কংগ্রেস ১০০-এর ঘর পার হতে পারবে না। টাইমস নাউ-ওআরজি বলেছিল, কংগ্রেস শতাধিক আসন পাবে। তখনকার জরিপে বলা হয়েছিল, বিজেপির জয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে উত্তর প্রদেশ। বলা হয়েছিল, ওই রাজ্যের ৮০টি আসনের মধ্যে দলটি ৪৫-এর বেশি আসন পাবে।

গতবারের নির্বাচনের বুথফেরত ফলাফলে বলা হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস এবং তামিলনাড়ুতে জয়ললিতার এআইএডিএমকে হচ্ছে দুই দল, যারা ২০টির বেশি আসন পাবে।
গতবারের জরিপে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ২৪৯ আসন পাবে বলেছিল টাইমসনাউ-ওআরজির জরিপ, নিউজ২৪-চাণক্য বলেছিল ৩৪০। এই জরিপটিতে কংগ্রেস ৭০-এর মধ্যে আসন পাবে বলে বলা হয়েছিল। আর টাইমসনাউ-ওআরজির জরিপ বলেছিল, কংগ্রেসের ইউপিএ জোট পাবে ১৪৮ আসন।

কংগ্রেস সরকারের প্রতি মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে। বিজেপি বিপুল বিজয় পায়। সাত রাজ্যে কংগ্রেস কোনো আসন পায়নি। কোনো রাজ্যের আসন দুই সংখ্যার হয়নি। অন্যদিকে এনডিএ জোট পায় ৩৩৬ আসন। গুজরাট, রাজস্থান, দিল্লি, উত্তরাখন্ড, গোয়া ও হিমাচল প্রদেশ রাজ্যের সব কটি আসন পায় দলটি। আর জোটসঙ্গীদের সঙ্গে প্রায় সব আসন পায় ছত্তিশগড়ে। উত্তর প্রদেশে ৮০টির মধ্যে ৭১ আসন পায়।

আর পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পায় ৩৪টি, তামিলানাড়ুর ৩৯ আসনের মধ্যে জয়ললিতার দলের পক্ষে যায় ৩৭ আসন। তবে মোদি-ঝড়ের মধ্যেও নবীন পট্টনায়েকের বিজেডি রাজ্যের ২১টির মধ্যে ২০ আসন পায়।