বুথফেরত সমীক্ষা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে তরজা

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

আর দুদিন পর ২৩ মে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ৫৪৩ আসনের ফল ঘোষণা করা হবে। এর আগে বুথফেরত সমীক্ষার ফলাফলে রাজনৈতিক দলগুলোর জয়–পরাজয়ের আভাস দেওয়া হয়েছে। এতে বিজেপিকেই আবার ক্ষমতায় আসার জোরালো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। তবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ক্ষমতায় পরিবর্তন আসতে পারে বলে বলা হয়েছে সেই সমীক্ষায়। আর এ নিয়েই চলছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা আলোচনা।

গত রোববার ভারতের লোকসভার শেষ বা সপ্তম দফা নির্বাচন শেষ হওয়ার পর বুথফেরত সমীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। কংগ্রেসসহ ইউপিএ এবং মমতা-চন্দ্রবাবুর তৈরি ইউনাইটেড ইন্ডিয়ার নেতারা বলেছেন, এর আগে ২০০৪, ২০০৯ ও ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর বুথফেরত সমীক্ষার যে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল, তা চূড়ান্ত ফলাফলের সঙ্গে মেলেনি। তাঁদের মতে, এবার ক্ষমতায় ফিরতে পারছেন না মোদি। দিল্লিতে সরকার হবে জনগণের সরকার, মোদি বিরোধী সরকার।

তবে বুথফেরত সমীক্ষাকে স্বাগত জানিয়ে বিজেপি বলেছে, এবারও দিল্লিতে ক্ষমতায় আসছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ। প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। আর পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম ঘটছে বিজেপির উত্থান। আর এই লক্ষ্যে এখন দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সাজানো চলেছে। টাঙানো হচ্ছে দপ্তরের সামনে বিরাট শামিয়ানা।

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘বুথফেরত সমীক্ষা আসল ছবির ইঙ্গিত দিয়েছে। তবুও আমরা বলব, বিজেপি এই রাজ্যে ২৩টির বেশি আসন পাবে।’ তিনি আরও বলেন, ২০২১ সালের আগেই পশ্চিমবঙ্গে ভেঙে যাবে মমতার সরকার। ২০২১ সালে এই রাজ্যের পরবর্তী বিধানসভার নির্বাচন হওয়ার কথা। সে পর্যন্ত টিকবে না মমতার সরকার। এখন বিভিন্ন দলের ১০০ জন বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করছেন। ইতিমধ্যে এঁদের অনেকেই তাঁর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।

তবে বুথফেরত জরিপে পরাজিতের তালিকায় পড়ে যাওয়া বিজেপির আসানসোলের প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় বলেছেন, ভোট গণনায় তিনিই জিতে যাবেন।

তৃণমূল নেতা ও মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি, সাংসদ মানস ভূঁইয়া, রূপালী বিশ্বাস, আবু তাহের, আবু হেনা, অপরূপা পোদ্দার, অর্পিতা ঘোষ, বীর বাহা সোরেনরা জানিয়েছেন, তাঁরা মানছেন না বুথফেরত সমীক্ষাকে। এই তৃণমূলের প্রার্থীদের পরাজিতের তালিকায় রাখা হয়েছে।

নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশন ২৭ মে পর্যন্ত এই রাজ্যে ২০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই রাজ্যে এবার নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ৭১০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আনা হয়। এর মধ্যে ২০০ কোম্পানি রেখে বাকি ৫১০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ফেরত পাঠানো হবে। এই রাজ্যে নির্বাচনী কার্যক্রম দেখার জন্য নির্বাচন কমিশন অজয় নায়েক এবং বিবেক দুবেকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল। ২৭ মে পর্যন্ত তাঁদের এই রাজ্যে রাখার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।