চেক আইনমন্ত্রীর বিরুদ্ধে টানা বিক্ষোভ

প্রাগে প্রধানমন্ত্রী বাবিসের অপসারণ চেয়ে র‍্যালি বের করেন ক্ষোভকারীরা। ছবি: রয়টার্স।
প্রাগে প্রধানমন্ত্রী বাবিসের অপসারণ চেয়ে র‍্যালি বের করেন ক্ষোভকারীরা। ছবি: রয়টার্স।

চেক প্রজাতন্ত্রের হাজারো নাগরিক টানা চার সপ্তাহ ধরে দেশটির আইনমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রিজ বাবিসের বিরুদ্ধে আনা ফৌজদারি মামলায় আইনমন্ত্রী বিঘ্ন ঘটাতে পারেন—এ সন্দেহে গতকাল মঙ্গলবারও তারা সড়কে অবস্থান করে।

প্রাগে প্রধানমন্ত্রী বাবিসের অপসারণ চেয়ে মিছিল করে বিক্ষোভকারীরা। তাদের দাবি, আইনমন্ত্রী মেরি বেনেসোভার মন্তব্য ও কার্যকলাপ দেখে সহজেই অনুমান করা যায় যে তিনি বাবিসের পক্ষ নিচ্ছেন। রাজনীতির মাঠে আসা কোটিপতি বাবিসের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুই মিলিয়ন ইউরো অবৈধভাবে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। ব্যবসায়ী বাবিস অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

২০১৭ সালে হাতেগোনা যে কজন আইনপ্রণেতা সংসদে ভর্তুকি মামলায় বাবিসকে জড়ানোর বিরোধিতা করেন, সংসদ সদস্য বেনেসোভা ছিলেন তাঁদেরই একজন। এর আগে ২০১৩ সালে বাবিসের মিত্র মাইলোস জেমানের নিয়োগ দেওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারে আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন বেনেসোভা।

প্রাগের কেন্দ্র ওয়েনসেসলাস স্কয়ারে সমবেত হয়েছে জনতা। জনগণের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে তাদের দখল করা এলাকার পরিধি। আয়োজকেরা এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে। চেক এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পতাকাবাহী জনতার হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘ন্যায়বিচারে চিড় ধরানো যাবে না’ কিংবা ‘আমি আমার প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে লজ্জিত’।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী জোসেফ হোভোর্কা বলেন, ‘বাবিসের মতো মানুষ যদি আমাদের প্রতিনিধিত্ব করে, সেটি মোটেই সুখকর নয়। অস্ট্রিয়াকে আমরা উদাহরণ হিসেবে নিতে পারি, যেখানে আরও ছোট অপরাধের জন্য রাজনীতিবিদেরা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।’ গত সপ্তাহের শেষ দিকে এক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর সিবাস্তিয়ান কার্জের জোট সরকারের পতনের দিকে ইঙ্গিত করেন তিনি।

চলমান প্রতিবাদ সত্ত্বেও বাবিস এবং তাঁর এএনও পার্টি আসন্ন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয়নি। নির্বাচনী মতামতে দেখা গেছে, তারা এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষের সমর্থন পাচ্ছে।

আদালতে যাওয়ার আগে মামলা থামিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আছে কেবল কৌঁসুলিদের। তাঁদের এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে বাবিসকে তাঁরা আদালতের মুখোমুখি করতে চান কি না। পুলিশ তদন্তপ্রক্রিয়া গুটিয়ে নেওয়ার এক দিন পর আইন মন্ত্রণালয়ে বেনেসোভার পূর্বসূরিরা পদত্যাগ করেছেন। রাজনৈতিক চাপ ক্রমেই বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।