কে জিতছেন, কে হারছেন?

নির্বাচনের আগেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা দিয়েছিলেন, এবার আর একটি আসনও বিরোধীদের ঝুলিতে যাবে না। ৪২টি আসনই যাবে তৃণমূলের থলিতে। বিরোধীশূন্য হবে পশ্চিমবঙ্গ। মমতার এই ঘোষণাকে কার্যকর করতে তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কেরা আদাজল খেয়ে মাঠে নামেন। অন্যদিকে, মমতার পাশাপাশি বিজেপির কেন্দ্রীয় সভাপতি অমিত শাহও ঘোষণা দেন, বিজেপি এবার এই পশ্চিমবঙ্গে জিতবে ২৩টি আসনে। আবার নির্বাচনের পরপরই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ঘোষণা দেন, ২৩ নয় আরও বেশি আসনে জিতবে এবার বিজেপি।

মমতার ৪২ আসনের জয়ের ছন্দে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বুথ–ফেরত সমীক্ষার ফলাফলও। দেশের সব বুথ–ফেরত সমীক্ষা একবাক্যে জানিয়ে দেয় পশ্চিমবঙ্গে ২টি নয়, ২ অঙ্কের সংখ্যার আসনে জিতবে বিজেপি। আজ বেলা ১১টার মধ্যেই জানা যাবে জয়–পরাজয়ের আভাস।

এই বুথ–ফেরত সমীক্ষাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, ‘মোদি হারছেনই। আমি বিশ্বাস করি না বুথ–ফেরত সমীক্ষাকে।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ তোলেন, বিজেপি এবার ইভিএম যন্ত্র বদলিয়ে ভোটে জেতার ষড়যন্ত্র করেছে। যদিও মমতার এই দাবিকে পাত্তা দেয়নি নির্বাচন কমিশন। মমতা রাজ্যের ইভিএম রাখা সব স্ট্রং রুম কড়া পাহারা দিতে বলেছেন দলের কর্মীদের। ফলে এখন পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক মহলে ভোটের ফলাফল নিয়ে পারদ চড়ছে। সবাই তাকিয়ে আছে মমতার ঘোষণা আর বুথ–ফেরত সমীক্ষার দিকে। কোনটা ঠিক হবে? সত্যি কি মমতা ৪২ আসন পাচ্ছেন, নাকি আসন কমে ৩২ কিংবা ২৪ হবে? কারণ কোনো কোনো বুথ–ফেরত সমীক্ষা বিজেপির ঝুলিতে ২২টি আসনও ভরে দিয়েছে।

গত রোববার লোকসভার ৫৪৩ আসনের শেষ বা সপ্তম দফার ভোট গ্রহণের পর ভারতের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল তাদের বুথ–ফেরত সমীক্ষায় যে ইঙ্গিত দিয়েছে, তাতে আপাতত মমতার স্বপ্ন ভেঙেচুরে ছারখার। ইঙ্গিত দেওয়া হয়, বিপুল ভোটে আবার ভারতে সরকার গড়বে মোদি। ফলে মমতার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন হারিয়ে যায় আপাতত বুথ–ফেরত সমীক্ষার কোপে। আর যদি আজ ফলাফল ঘোষণার দিন যদি দেখা যায় বুথ–ফেরত সমীক্ষার সব হিসাব ভুল। উল্টে গেছে। মমতার দলের পশ্চিমবঙ্গের ফলাফলের হিসাবও ভুল। সে ক্ষেত্রে মমতার হয়তো আবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ আসতে পারে! তবে এই যুক্তি মানছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, এটা মমতার অলীক স্বপ্ন।

এদিকে বুথ–ফেরত সমীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গের ছয় তারকা পেয়েছেন জয়ের আভাস। তাঁরা হলেন হুগলিতে বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়, আসানসোলে তৃণমূলের মুনমুন সেন, বীরভূমে তৃণমূলের শতাব্দী রায়, বসিরহাটে তৃণমূলের নুসরাত জাহান এবং যাদবপুরে তৃণমূলের মিমি চক্রবর্তী আর ঘাটালে অভিনেতা দেব।