মাস্টারপ্ল্যানে ফেল মারলেন ইমরান, তেল-গ্যাসের খোঁজ পেল না পাকিস্তান

ইমরান খান। ছবি: রয়টার্স
ইমরান খান। ছবি: রয়টার্স

ক্ষমতায় আসার পরই বেশ ঘটা করেই শুরু করেছিলেন তেল সম্পদের খোঁজ। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দৈন্যদশা কাটাতে এটাকে অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর ইমরান খানের মাস্টার স্ট্রোক বলতেন। তা আর হয়নি। উপকূলে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ভান্ডারের সন্ধান পেল না পাকিস্তান। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ট্রিবিউন ডটকম এক খবরে এ কথা জানিয়েছে।

করাচি উপকূলে আরব সাগরে তেল ও গ্যাসের অনুসন্ধানে চার মাস আগে খননকাজ শুরু হয়। ইতালির ইএনআই, মার্কিন তেল উৎপাদন সংস্থা এক্সন মোবিল, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি গ্যাস ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ওজিডিসিএল) এবং পাকিস্তান পেট্রোলিয়াম (পিপিএল) একসঙ্গে খনন কাজ শুরু করে। ২৫ শতাংশ করে ভাগে নিয়ে চার কোম্পানি খননকাজ করলেও কিছু খুঁজে পায়নি। সরকারি এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ট্রিবিউনকে বলেছেন, সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি মিটার খনন করেও কোনো জ্বালানির সন্ধান মেলেনি। তিনি বলেন, এখানে ১০ বছর আগে নেদারল্যান্ডসের কোম্পানি সেলও খননকাজ করেছিল। তারাও কিছু খুঁজে পায়নি।

করাচি উপকূলে আরব সাগরে তেল, গ্যাসসহ প্রাকৃতিক জ্বালানি খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন ইমরান খান। ওই তেল ও গ্যাসের ওপর নির্ভর করেই চরম আর্থিক দুরবস্থা থেকে দেশকে বের করে আনার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। সেদিক থেকে এটি তাঁর জন্য বড় দুঃসংবাদ। তেল বা গ্যাসভান্ডারের সন্ধান না মেলায় করাচির কাছে গভীর সমুদ্রে খননকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর পেট্রোলিয়ামবিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা নাদিম বাবর।

নাদিম বাবর সংবাদমাধ্যমকে জানান, সাড়ে পাঁচ হাজার মিটারেরও বেশি খননকাজ শেষ হয়েছে। এত খননকাজ শেষেও জ্বালানির সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরিত্যক্ত এ খনন প্রকল্পের জন্য ১০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি খরচ হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত মার্চেই ইমরান খান ঘোষণা দিয়েছিলেন যে পাকিস্তানকে আর তেল আমদানি করতে হবে না। কারণ, করাচি উপকূলের কাছেই গভীর সমুদ্রে তেলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রায় ভেঙে পড়েছে পাকিস্তানের অর্থনীতি। চীন, সৌদি আরবের কাছে হাত পাততে হয়েছে ইমরান খানকে। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। সাবেক সরকারের সমালোচনা করলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ নিচ্ছেন ইমরান খান। আপাতত পাকিস্তানকে ৬০০ কোটি (৬ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে আইএমএফ। বিশেষজ্ঞদের মতে, আইএমএফ থেকে ঋণ নিলেও সমস্যা মিটবে না। কারণ পাকিস্তানের রাজস্ব ঘাটতি বেড়েই চলেছে। ফলে ঘাটতি পূরণ করতে সরকারকে কর বাড়াতে হবে, বা সরকারি প্রকল্পে ব্যয় কমাতে হবে। সব মিলিয়ে ইমরান খানের জন্য খুব সুখের খবর আপাতত নেই।