এভারেস্টে 'ট্রাফিক জ্যাম'

এভারেস্টে ওঠার পথে মানুষের ভিড়ের এ ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন পর্বতারোহী নির্মল পুরজা।
এভারেস্টে ওঠার পথে মানুষের ভিড়ের এ ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন পর্বতারোহী নির্মল পুরজা।

এভারেস্ট জয় করার আশায় পর্বতারোহীদের সারি দীর্ঘ হচ্ছে। এমনকি সেখানে তৈরি হচ্ছে ‘ট্রাফিক জ্যাম’। বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতচূড়ায় পৌঁছাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে আরোহীদের। সারি বেঁধে পর্বতশৃঙ্গে ওঠার পথে আটকা পড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। ২২ মে এমন ঘটনায় দুজন পর্বতারোহী নিহত হয়েছেন। এতে পর্বতারোহীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ভারতের পর্বতারোহী অঞ্জলি কুলকার্নি (৫৫) গত বুধবার চূড়া থেকে নামার পথে মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন তাঁর ছেলে শান্তনু কুলকার্নি। আট হাজার মিটার ওপরে চূড়ায় ওঠার আগের ‘ক্যাম্প ৪’–এর ওপরে ‘ট্রাফিক জ্যামে’ আটকে পড়েন তিনি।

২২ মে মার্কিন পর্বতারোহী ডোনাল্ড লিন (৫৫) চূড়া থেকে নামার পথে শীর্ষ উচ্চতায় অসুস্থ হয়ে মারা যান। নেপালের পাইওনিয়ার অ্যাডভেঞ্চার প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি অভিযান পরিচালনা প্রতিষ্ঠান তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে।

গত বুধবার পর্বতারোহী নির্মল পুরজা ইনস্টাগ্রামে এভারেস্টে ওঠার পথে ওই ট্রাফিক জ্যামের একটি ছবি পোস্ট করেন। ওই ছবিতে পর্বতারোহীদের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘ডেথ জোন’ বা ‘মৃত্যুপ্রবণ এলাকা’ হিসেবে খ্যাত ওই এলাকায় ৩২০ জনের বেশি মানুষ সারি বেঁধে অপেক্ষা করছেন।

নেপালের পর্যটন বিভাগের পরিচালক দেনদুরাজ গিমেয়ার ট্রাফিক জ্যামের কারণে পর্বতারোহী নিহত হওয়ার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, ‘এগুলো ভিত্তিহীন।’

মাউন্ট এভারেস্টের ৮ হাজার ৮৪৮ মিটার উঁচুতে চূড়ায় অক্সিজেনের পরিমাণ কম থাকায় পর্বতারোহীদের শরীর দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে। অর্থাৎ অতিরিক্ত অক্সিজেন সরবরাহ ছাড়া সেখানে কয়েক মিনিট থাকা যায়।

গিমেয়ার বলেন, এ মৌসুমে পর্বতে ওঠার জন্য আবহাওয়া খুব বেশি অনুকূলে নেই। তাই যখনই আবহাওয়া একটু ভালো হচ্ছে, পর্বতারোহীরা সামনে এগোচ্ছেন। কয়েক দিনের বাজে আবহাওয়ার পর ২২ মে আবহাওয়া কিছুটা পরিষ্কার হয়। তখন ২০০ জনের মতো পর্বতারোহী সামনে এগোতে থাকেন। এ মৌসুমে যতজন মারা গেছেন, তাঁদের অধিকাংশ অতি উচ্চতায় অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন।

১৯২২ সাল থেকে এ পর্যন্ত হিমালয়চূড়ায় ২০০ জনের বেশি পর্বতারোহী মারা গেছেন। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগের শরীর তুষার বা হিমবাহে চাপা পড়েছে বলে ধারণা করা হয়।